পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জন্মের ইতিহাস সুলতা ঘরে গিয়া শুইয়া পড়িল। বার দুই অকারণেই তাহার সর্বাঙ্গ রোমাঞ্চিত হইয়া উঠিল। চোখ বুজিয়া সে ভাবিতে লাগিল, ও কি ঠিক সময়ে আজ আসতে পারবে ? সকাল বেলাই শরীর ভাল ঠেকছিল না, কেন বললাম না। তখন p ছোট ননদ সুধাময়ী পাড়া বেড়াইতে গিয়াছিল, ফিরিয়া আসিয়া সন্তৰ্পণে বিছানার একপাশে বসিল, কানে মুখ রাখিয়া চুপি চুপি বলিল, 'বৌদি সেই যে বলবে বলেছিলে, এবার বল !" সুলতা অবাক হইয়া গেল। কিশোরী মেয়ের একি কৌতুহল! বিবাহের কথায় যে এখনো ভাল করিয়া লজ্জা পাইতে শেখে নাই, সে জানিতে চায় পৃথিবীর আলোবাতাসের ডাকে খোকা সাড়া দিতে চাহিলে জননীর কেমন क्ल(5ों । মাংসের সীমানায় আলোর জন্মেরও পূর্বেকার যে আদিম অন্ধকার নিয়া মানুষ পৃথিবীতে আসে, পৃথিবীর আলো কোনদিনই যে অন্ধকারের নাগাল পায় না, চিতাগ্নির পথে যে অন্ধকার আবার আলোর যবনিকার ওপারে। চলিয়া যায়, সেই অন্ধকারে শিশুর অস্তিত্ব সুধার মনে জিজ্ঞাসা জাগায় না । জীবনের আরম্ভ । তাহার কাছে শিশু ভূমিষ্ঠ হইবার পর,-অর্ণাতুড়ে। সে শুধু জানিতে চায়, ওই আরম্ভটা কেমন, শিশুর কাছে উহা কেমন লাগে। অকস্মাৎ চারিদিকে আলো ও শব্দের সমারোহ তাহার নিজের একদিন কেমন লাগিয়াছিল ? যে মা হইতে বসিয়াছে তাহার অনুভূতির মধ্যে সে এই দুর্বোধ্য ঝাপসা কৌতুহলের সমাপ্তি খোজে । গতকল্য বেশ মনে পড়ে, গতবৎসর এতটুকু অস্পষ্ট নয়। এই উজ্জলতা কমিয়া কমিয়া সীমান্তের কাছে স্মৃতি শুধু কয়েকটা অস্পষ্ট বিচ্ছিন্ন ঘটনা, তাহার পরেই এক অদ্ভূত রহস্য ভরা কুয়াশা ৷ সুধা জানিতে চায় ওই রহস্যের মধ্যে সে কি ছিল। জবাব না পাইয়া তাহার রাগ হইয়া গেল। বলিল, “বলবে না তো ? আচ্ছা, নাই বললে।” طب সুলতা বলিল, “বলছি। বড় মাথা ধরেছে।” সুধা হতাশ হইয়া বলিল, “এই শুধু ?

  • আর ভয় করছে।”

ভয় । মনে হইল এবার যেন সুধা তাহার প্রশ্নের সদুত্তর পাইয়াছে। চোখ @b->