পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ετή Θ είτε মনমরা হয়ে থেকে সেদিন যখন সকাল বেলা আপনার বাড়ীর সামনে নােমলাম, মনে হল এতদিনে আমারও বুঝি কপাল ফিরল। কিন্তু দু’ঘণ্টার মধ্যে এমন কথাই শোনালেন যে প্রদোষের আধ’ অন্ধকার আমি আর অতিক্রম করতে পারলাম না । আচ্ছা,-কম্পিত আঙ্গুলো আঁচল জড়াইতে জড়াইতে বলিল, আচ্ছা আপনার বিয়ে হয়েছে কতদিন ? সাত বছর। সাত বছর । শিশু যে এল না সে অপরাধ। তবে কার ? লজ্জা করবেন না, বলুন। এ না জানলে আমার চলবে না। সেটা এখনও নির্ণীত হয়নি। নিৰ্ণীত হয়নি । রাধা স্তব্ধ হইয়া গেল । হেরাম্বের চোখে পলক নাই, শিরার রক্ত চলাচলের মাঝখানে একবার একটা উত্তেজনা দেখা দিয়াছিল আবার তাহা শান্ত হইয়া গিয়াছে। কথা হইতেছিল বারান্দায় বসিয়া, উঠানের একপাশে দৈত্য হাঁসের পালক ছাড়াইতেছিল,—বৃদ্ধের জন্য মাংসের জুস হইবে। দেখিতে দেখিতে হাসটা কদৰ্য মাংসপিণ্ডে পরিণত হইয়া গেল। হেরম্বের সর্বাঙ্গ শিহরিয়া উঠিল। প্ৰাণিহত্যা দেখলে কষ্ট হয়, না ? হেরম্ব উদাসভাবে বলিল, না । আশ্চর্য! আমারও হয় না। তবে হয়ত আমার যে জন্য কষ্ট হয় আমারও সেজন্য কষ্ট হওয়া উচিত ? হেরম্ব মৃদু হাসিল, তা হয়। জন্ম-মৃত্যুর মধ্যেই আমার সীমা, এ চিন্তা সুখদায়ক নয়। ইহার পর দু’জনে বহুক্ষণ কথা বলিল না। আকাশে বিকাল হইয়াছে, প্ৰভা যে বৈকালিক জলখাবার সাজাইয়া বসিয়া আছে বারংবার সে কথা হেরম্বের মনে পড়িতে লাগিল। এবং তাহাতে বিস্ময়ের তাহার সীমা রহিল না। ক্ষুধার সাড়া নাই, প্রভার খাবারের কথা এত করিয়া মনে পড়ে কেন ? বিশেষ করিয়া আজিকার এই অপরাহে, এই রহস্যময়ীর সান্নিধ্যে চিন্তার জটিল পাক খাওয়ায় ? W মাংস কাটিয়া দৈত্য উঠিয়া গিয়াছিল। হঠাৎ হেরম্ব সচেতন হইয়া উঠিল, কড়া তামাকের দুর্গন্ধে চারিদিক ভরিয়া গিয়াছে। রাধা চিকিতভাবে বলিল, তামাকের গন্ধ পাচ্ছেন ? পাচ্ছি। দৈত্য খাচ্ছে বোধ হয়। R9RS