পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

शानिक अंहावली নানকু দলের প্রধান কানাইয়ার ছেলে ! বয়স তার চব্বিশের কাছে। তখন হেরম্বের মনে পড়ে যায় নানকু ও এই মেয়েটির বিবাহোৎসবের কথা । মধুজোলের বনে শাল কাটাতে সে তখন সাঁওতালী গা গড়পায় আস্তানা করেছিল। মধুজোলের বনের ছোট একটা অংশ পেয়েছিল। কিন্তু সেই অংশটুকুও ঝুমুরিয়ার এই বনের প্রায় সাতগুণ বড় ছিল এবং ঠিক এবারের মতই সময়ের টানাটানিতে বিব্রত হয়ে তাকে কাজ চালাতে হয়েছিল উর্ধশ্বাসে। গড়পার স্থায়ী বাসিন্দা হেমন্ত সঁওতালের এই মেয়েটির সঙ্গে তখন যাযাবর দলের নানকুর ভালবাসা হয়। কেবল মেয়ের বাপ নয়, গড়পার গায়ের সাওতাল সমাজ এ বিয়েতে আপত্তি করেছিল। কিন্তু এমনি এক মৃদু শীতল সন্ধ্যায় নানকুর সঙ্গে মেয়েটি চলে আসে বনের প্রান্তে এ দলের শিবিরে। তীর বর্শা বা টাঙ্গির আঘাতে ঘায়েল হবার জন্য প্ৰস্তুত হয়ে নানকু গড়পার শেষ মার্টির ঘরখানার পচিশ হাত তফাতে জামগাছের নীচে শিয়ালকাটার ঝোপে তার জন্য অপেক্ষা করছিল। বিয়েটা হয়েছিল যথারীতি এবং যথেষ্ট উৎসবের সঙ্গে কিন্তু দু'পক্ষের বাগড়াটা সামলাতে হয়েছিল হেরম্বকে । মিটমাট সে করতে পেরেছিল। কিন্তু সেটা তার টাকার জোর, গণ্যমান্যতার জোর বা দারোগ। পুলিশের খাতিরের জোরে সম্ভব হয়নি। সঁওতাল সমাজের একজন বলে গণ্য হবার অধিকার আগে থেকে পাওয়া না থাকলে মধ্যস্থ হয়ে মিটমাটের চেষ্টা করার সুযোগও সে পেত না। বছর দুই আগে সাঁওতালদের এক বড় পরবের দিনে সঁওতালদের এক বিরাট মেলায় তাকে সঁওতাল হবার অধিকার দেওয়া হয় 62: oiseo « too \e(fo FC2 Coyotario Pro ! উগ্ৰ প্ৰতিক্রিয়ার বদলে হেরম্বের মন আত্ম নিগ্রহের জ্বালাময় বিষাদে ভরে যায়। প্ৰথম জীবনে প্ৰথম গুরুতর নৈতিক বা ব্যবহারিক অন্যায় করার পর যেমন হত তেমনি অস্থিরতা তাকে আকুল করে তোলে। চুরুট ছাড়ে ফেলে সে ডাকে, “ভারত !” কাঠের ঘর থেকে ছিটের গলাবন্ধ কোটি গায়ে শীর্ণকায় মাঝবয়সী ভরত বেরিয়ে আসে। বসন্তের ছাপের মত মুখভরা অসংখ্য ব্ৰণের দাগ, চোখ নাকের নীচে বাবুয়ানি ছাটা গোফ, লোমবহুল মোটা ভুরু শোভিত কোটরগত একজোড়া গোল কটা চোখ। পায়ে বাদামী ক্যান্বিশের জুতো, চলাফেরায় শব্দ হয় না। হেরম্বের সে পুরানো বিশ্বাসী অনুচর ও সেবায়েৎ । 8