পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ব-নির্বাচিত গল্প.pdf/১৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হলুদ পোড়া SSRS সম্পর্ক আবিষ্কায় করার জন্য প্ৰাণ সকলের ছটফট করে। কিন্তু বলাই চক্রবর্তী শুভ্রাকে কবে শুধু চোখের দেখা দেখেছিল তাও গায়ের কেউ মনে করতে পারে না। একটুখানি বাস্তব সত্যের খাদের অভাবে নানা জনের কল্পনা ও অনুমানগুলি গুজব হয়ে উঠতে উঠতে মুষড়ে যায়। বলাই চক্রবর্তীর সম্পত্তি পেল তার ভাইপো নবীন। চল্লিশ টাকার চাকরি ছেড়ে শহর থেকে সপরিবারে গায়ে এসে ক্রমাগত কেঁচার খুটে চশমার কঁচ মুছতে মুছতে সে পাড়ার লোককে বলতে লাগল, “পঞ্চাশ টাকা রিওয়ার্ড ঘোষণা করেছি। কাকাকে যারা অমন মার মেরেছে তাদের যদি ফাসিকাঠে ঝুলোতে না পারি-” চশমার কঁাচের বদলে মাঝে মাঝে কেঁচার খুটে সে নিজের চোেখও মুছতে ब्रॉन । ঠিক একুশ দিন গায়ে বাস করার পর নবীনের স্ত্রী দামিনী সন্ধ্যাবেল লণ্ঠন হাতে রান্নাঘর থেকে উঠান পার হয়ে শোবার ঘরে যাচ্ছে, কোথা থেকে অতি মৃদু। একটু দমকা বাতাস বাড়ির পুব কোণের তেঁতুল গাছের পাতাকে নাড়া দিয়ে তার গায়ে এসে লাগল। দামিনীর হাতের লণ্ঠন ছিটকে গিয়ে পড়ল দক্ষিণের ঘরের দাওয়ায়, উঠানে আছড়ে পড়ে হাত পা ছুড়তে ছুড়তে দামিনীর দাঁতে দাত লেগে গেল। দালানের আনাচে-কানাচে ঝড়ো হাওয়া যেমন গুমরে গুমরে কঁাদে, দামিনী আওয়াজ করতে লাগল। সেই রকম। শুভ্রার দাদা ধীরেন স্থানীয় স্কুলে মাষ্টারি করে। গায়ে সেই একমাত্র ডাক্তার পাস-না-করা । ফিজিক্সে অনার্স নিয়ে বি-এস-সি পাশ করে সাত বছর গায়ের স্কুলে জিওগ্রাফি পড়াচ্ছে। প্ৰথম দিকে প্ৰবল উৎসাহের সঙ্গে সাতচল্লিশখানা বই নিয়ে লাইব্রেরী, সাতজন ছেলেকে নিয়ে তরুণ-সমিতি, বই পড়ে পড়ে সাধারণ রোগে বিনামূল্যে ডাক্তারি, এইসব আরম্ভ করেছিল। গেয়ে একটি মেয়েকে বিয়ে করে ফু’বছরে চারটি ছেলে-মেয়ের জন্ম হওয়ায় এখন অনেকটা ঝিমিয়ে গেছে। লাইব্রেরীর বই-এর সংখ্যা তিনশ’তে উঠে থেমে গেছে, তার নিজের সম্পত্তি হিসাবে বইয়ের আলমারি তার বাড়িতেই তালাবন্ধ হয়ে থাকে, চান্দা কেউ দেয় না, তবে দু’চারজন পড়া-বই আর একবার পড়ার জন্য মাঝে মাঝে চেয়ে নিয়ে যায়। বছরে দু’তিনবার তরুণ-সমিতির মিটিং হয়। চার আনা আট আনা ফি নিয়ে এখন সে ডাক্তারি করে, ওষুধও বিক্ৰী করে। to v-fifts wo