পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ব-নির্বাচিত গল্প.pdf/১৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S63 w সুভদ্ৰা উঠিয়া খাইতে গেল এবং পেট ভরিয়াই খাইল। সে রাত্রে সাধনকে সে আর কাছে ঘোষিতে দিল না। কালিদাসী যে সম্মান করিয়া তাকে আজ প্ৰথম বঙুম দিদি বলিয়া ডাকিয়াছে তাতে তার মনে বড়ই আঘাত লাগিয়াছিল। পরদিন সকালে এত খদের আসিয়া জুটল যে সাধনের দোকানের অল্প বিড়ি সিগারেট ফুরাইয়া গেল আধা ঘণ্টার মধ্যে, বেগুনী ফুলুরি ভাজিয়া সুভদ্রা অর্ধেক লোকের দাবি মিটাইয়া উঠিতে পারিল না। সকলেই সুভদ্রার গানের প্রশংসা করিতে চায়, বলিতে চায় যে বেগুনী ফুলুরির এমন স্বাদ ত জীবনে তারা পায় নাই। সংকীর্ণ বারান্দায় উবু হইয়া বসিয়া আর বারান্দার সামনে গোল হইয়া দাড়াইয়া সকলে যেন একটি বৈঠক বসাইয়া দিল। লোচন কুমোর প্রতিমা গড়িতে ওস্তাদ, একটি মাত্র বেগুনী খাইয়া যেন নেশা হইয়াছে এমনিভাবে সে আধঘণ্টা হঁহা করিয়া চাহিয়া রহিল সুভদ্রার দিকে । সুভদ্রার আশ্চৰ্য মুখের ছাদ ও দেহের গড়ন দেখিয়া তার মনে ভাবের তরঙ্গ উঠিতে লাগিল। একে সামনে রাখিয়া সে যদি প্ৰতিমা গড়িবার সুযোগ পাইত ! সতীশ গোয়ালা ভাবিতে লাগিল, ইনি নিশ্চয় সাক্ষাৎ ভগবতী। বংশী হালদার সারাদিন মিউনিসিপ্যালিটির ট্যাক্স আদায় করিয়া ঘুরিয়া বেড়ায়, সুভদ্রার গেরুয়া বেশ যেন রোদে ঝলসানো শহরের সুরকির পথের মত চোখে তার ধাধা লাগাইয়া দিতে লাগিল। নটাবর একজন বড়লোকের খানসামা, সে ভাবিতে লাগিল, সুভদ্রার সঙ্গে একবার যদি ঘনিষ্ঠত করাইয়া দেওয়া যায়, কি খুশীই বাবু হইবেন। এই চারজন ছাড়া সকলেই কমবেশী কথা বলিতেছিল, দু’একজন কথা বলিবার চেষ্টায় ঢোক গিলিতেছিল । ‘এবার আমি রাধতে যাই ? বলিয়া এক সময় সুভদ্ৰা ভিতরে চলিয়া গেল। আবার দোকান খুলিল একেবারে সেই বিকালে। একবেলাতেই দোকানদারিতে তার বিতৃষ্ণ জন্মিয়া গিয়াছে। লোকগুলি বড় ভেঁাতা, বড় নীরস। বেগুনী ফুলুরি কিনিতে আসিয়া তাকে যেন সকলেই বঁাধিয়া ফেলিতে চায়, তার সাহচর্ষে ভুলিয়া যাইতে চায় নিজেদের। বিকালেও খদের আসিল অনেক এবং দিন দিন খদ্দেরের সংখ্যা বাড়িতে লাগিল । তখন বেগুনী ফুলুরি ভজিবার জন্য একজন লোক রাখিয়া দেওয়া হইল। সুভদ্ৰা e sifs s-ţiţca e