পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ব-নির্বাচিত গল্প.pdf/২০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ख्श्विक রাত্রি প্রায় আটটার সময় জনহীন ক্ষুদ্র স্টেশনটিতে যাদবকে নামাইয়া দিয়া বিনা সমারোহে ট্রেনটা চলিয়া গেল। যাত্রী নামিয়াছিল মোটে তিনজন, তাদের একজন যাদব নিজে। টিকিট আদায় করিয়া স্টেশন মাস্টার গিয়া ঢুকিল তার ঘরে আর টিমটিমে তেলের আলো দুটি নিবাইয়া দিয়া কুলিটাও তার কোটরে অদৃশ্য হইয়া গেল। তখন যাদব প্ৰথম টের পাইল, বছরখানেক শহরে বাস করিয়াই মফঃস্বলের অন্ধকার রাত্রির সঙ্গে তার পরিচয় অনেকটা শিথিল হইয়া আসিয়াছে। কোমরে বাধা টাকাগুলির জন্য অন্ধকার রাত্রে ছ’সাত মাইল পথ হাটিয়া যাইতে ভয় করিবে, এতক্ষণ কে তা ভাবিতে পারিয়াছিল ? শেষ রাত্রে চাদ উঠিবে, এখন চারিদিকে অমাবস্যার অন্ধকার। তারার আবছা আলোয় পথের আরম্ভটা মোটামুটি স্থির করা যায় মাত্র। তবে অনেকগুলি বছর বৌ-এর বাপের বাড়িতে বেকার বসিয়া শ্বশুরের অন্নধ্বংস করিতে হওয়ায় স্টেশন হইতে সেই গ্রাম পৰ্যন্ত পথটি যাদবের এত বেশী পরিচিত যে কল্পনায় দু’পাশের বিস্তীর্ণ মাঠ আর ক্ষেত, আমবাগান আর জঙ্গল এবং মাঝে মাঝে কাছের ও দূরের দু’একটি ছোট ছোট ঘুমন্ত গ্রাম সে পরিষ্কার দেখিতে পায়। স্টেশনের বাহিরে দিগন্তব্যাপী রহস্যময় পাতলা অন্ধকারের দিকে চাহিয়া তার মনে হয়, রাত্রিটা এখানে কাটাইয়া দিলে কেমন হয় ? কিন্তু তারপর আবার মনে হয়, তাতেই বা লাভ কি! সঙ্গে কিছু টাকা আছে বলিয়াই যদি একা এতটা পথ যাইতে তার ভয় করে এখানে থাকিলেই বা এমন কি নিরাপদ আশ্ৰয় তার জুটিবে, যেখানে টাকার ভাবনা না ভাবিয়া নিশ্চিন্ত মনে রাত্রিটা ঘুমাইয়াকাটাইয়া দেওয়া চলিবে ? স্টেশন-মাস্টারের ঘরের সামনে ওই তিন হাত চওড়া শেডটার নিচে সরু বেঞ্চটাতে শুইয়াই সম্ভবতঃ রাতটা তার কাটাইয়া দিতে হইবে, এই জনশূন্য ফাঁকা স্টেশনে! টাকা যে তার সঙ্গে আছে, এ খবরটা ত কারও জানিবার কথা নয়। শহরে এগার মাস চাকরি করিয়াই সে-যে শ'খানেক টাকা জমাইয়া ফেলিয়াছে আর সবগুলি টাকা সঙ্গে নিয়াই ছেলেমেয়ে ও বৌকে শহরে নিয়া যাইতে আসিয়াছে, এরকম একটা ধারণা চোর ডাকাতের মনে আসিবে কেন? তা ছাড়া, ছুটি মোটে Ow-f6ts vo