পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/২৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

bang labOOKS. in Rdbr মানিক রচনাসমগ্ৰ চোখে পডে, অধরোষ্ঠের নিগৃঢ় অভিপ্ৰায়ের সে মমোদঘাটন করে, কপালে ছেলেখেলার হারজিতের হিসাবগুলিকে গোনে। ঘরের আলো বর্ষার মেঘে স্তিমিত হয়ে থাকে। আনন্দ শ্রান্তস্বাবে বলে, কী বৃষ্টিই নেমেছে! সমুদ্রটা পর্যন্ত বোধ হয়। ভিজে গেল। হেরম্ব কথা বলে না। আনন্দের বর্ষা-বিরাগে তার দিন আরও কাটতে চায় না। চুবুটের গন্ধে আনন্দ মুখ ফিবিয়ে জানালার দিকে তাকাল। হেরম্ব ভাবল, আনন্দ হয়তো হাতছানি৷ দিয়ে তাকে ডাকবে। এখন বাগানে যেতে অস্বীকার করার জন্য হেরম্ব নিজেকে প্রস্তুত করেছে, আনন্দ মৃদু হেসে মাথা নাডল, যােব সুস্পষ্ট অর্থ, এখন হেরম্বেব বাগানে যাবাব দবকার নেই ; দূরত্বই ভালো, এই ব্যবধান। হেরম্ব চুবটটা ফেলে দিয়ে সরে গেল। কাছাকাছি না গেলে চাওয-চাওযিাও এখন না। হলে চলবে । গামছা কাপড় নিযে হেরম্ব খিডকিব দরজা দিয়ে বার হয়ে বাড়ির পূর্বদিকের পুকুলে স্নান কলে এল। বাডিতে ঢুকে দেখল, বাগান থেকে ঘবে এসে আনন্দ অনাথের কাছে গল্প শুনতে বসেছে। হেরান্স ও একপাশে বসে পড়ল। গল্প শোনার প্রত্যাশায় নয় . অনাথেবা বলা ও আনন্দের শোনা দেখবার জন্য। অনাথ আজ মেয়েকে নচিকেতাব কাহিনি শোনাাচ্ছে । তস্য হ নচিকেতা নাম পুত্ৰ আস। বাজশ্রবসের নচিকেতা নামে এক পুত্র ছিল। একবার এক যজ্ঞ কবে বাজশ্রবস নিজের সর্বস্ব দান কবলেন। দক্ষিণা দেবাব সময় হলে নচিকেতা----স হোবাচ। পিতলেং তত কস্মৈ মাং দাসসি ইতি, আমায কাকে দেবেন ? নচিকেতা তিনবার এ প্রশ্ন করলে বাজশ্রবস বাগ? কবে বললেন, তোমায যমকে দেব। হেবম্ব মৃদু সবে বলল, যম নয, মৃত্যুাকে। হেরম্ব বলল, উপনিষদে মৃত্যুা শব্দটা আছে। আনন্দ তাৰ এই বিদ্যাব পরিচয়ে মুগ্ধ হল না। বলল, তালপাল কী হ’ল বাবা ?” হেলম্বেব মনে হয, আনন্দ তাকে অবহেলা করেছে। তার অস্তিত্বকে আনন্দোব এ পরিপূর্ণ বিস্মৰণ। বাগানে আনন্দুেব ঘােড় নাডা ধরলে এই নিয়ে দুবার হল। সকালেব শুরু দেখে আজকেল দিনটি হেরান্স মোটামুটি নিবানন্দের মধ্যে কাটিয়ে দেবােবও আশা কবতে পারে না। এদিকে মালতী এসে নচিকেতার কাহিনিতে বাধা জন্মায । তাবপর কী হ’ল বাবা ? কচি খুকিব মতো সকালে উঠে গল্পো গিলছিস ; স্নান টান কবে মন্দিবটা খোল না গিয়ে । কাজের সময় গপ্পো কি ? অনাথ বলে, এমনি কবে বুঝি বলতে হয়, মালতী ? কী করে বলব। তবে ? একটা কাজ করতে বলার জন্যে পেটের মেয়ের কাছে গলবস্তু হতে হবে ? অনাথ চুপ কবে যায়। আনন্দ স্নানের উদ্দেশ্যে চলে যায় পুকুরে। তবে পরিত্যক্ত স্থানটি দখল করে বসে মালতী। হেরম্বেব মনে হয়, সেও বুঝি অনাথের কাছে গল্পই শুনতে চায। যে-কোনো কাহিনি। হেবন্সের আবির্ভাবে এদের দুজনের সম্পর্কে বিশেয কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। অনাথের অসঙ্গত অবহেলার জবাবে মালতীর স্বেচ্ছাচারিতা যেমন উগ্র ছিল তেমনি উগ্র হয়েই আছে। কিন্তু তার সমস্ত বৃক্ষ আচরণের মধ্যে একটি পিপাসু দীনতা, ক্ষীণতম আশ্বাসের প্রতিদানে নিজেকে আমূল পরিবর্তিত কলে ফেলবার একটা অনুচ্চারিত প্ৰতিজ্ঞা হেরম্ব আজকাল সর্বদা আবিষ্কার করতে পারে। বোঝা যায়, অনাথের প্রতি মালতীর সমস্ত ঔদ্ধত্য অনাথকে আশ্রয় করেই যেন দাঁড়িয়ে থাকে। নিজের জীবনে সে যে স্থল অপরিচ্ছন্নতা আমদানি করেছে, অনাথের গায়ে তার নমুনাগুলি লেপন করে