পাতা:মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/৩৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

bang labOOOkS. in পুতুলনাচের ইতিকথা Փ6 Գ যামিনীর মুখ কযেকদিন সম্ভবত দুশ্চিন্তাতেই শুকাইয়া পাংশু হইযা গিয়াছে। সে চোখ মিট-মিট করিয়া বলে, আমি কবরেজ মানুষ, তোমাদের ওষুদের আমি কী জানিব ভাই ? আমি তো কিছুই জানি না ? জানেন না তো আমায় না বলে ওষুধ খাওয়ালেন কেন ? আপনিই মারবেন ঠাকুর্দা সেনদিদিকে, গুটি পাকছে, এখন আপনি খাইয়ে দিলেন গুটি-বসানোর ওষুধ ? যামিনী কথা কয় না। শশী একটু নরম হইয়া বলে, বডো অন্যায় করেছেন ঠাকুর্দা, আর যেন এমন কববেন না কখনও। যামিনী বলে, আমাব একটা ওষুদ খাইয়ে দেলে শশী, তাড়াতাডি যাতে গুটি পাকে ? শশী তৎক্ষণাৎ সন্দিগ্ধ হইয়া বলে, খাইয়েছেন না কি কিছু? আপনার ওষুধ দ্য নাঃ, আমার ওষুদ খায় না। তাব মানে চেষ্টা করেছিলেন খাওয়াবার? উদভ্ৰান্ত যামিনী এবাব খেপিয়া যায়। যদি কবে থাকি ? হ্যা হে শশী, যদি করেই থাকি ? তোমাব ও সব মদ আর সিরাপে আমি বিশ্বাস কবি না বাপু ! চিকিৎসা হচ্ছে! এই যদি তোমাব বসন্তেব চিকিৎসা হয, পুথিপত্র খালে ভাসিয়ে ঘরেব ছেলে ঘবে গিয়ে বসো গে যাও ! বলিতে বলিতেই যামিনী সাহস হাবায, তবু মরিয়াব মতো বলে, তুমি আব্ব এসো না! মাথা শশাও ঠিক রাখিতে পাবে না, বলে গোড়া থেকে আপনি যা সব কাণ্ড কবছেন ঠাকুর্দা, পুলিশ ডাকলে আপনার দশ বছর জেল হয়। যামিনী বিবৰ্ণ মুখে বলে, কী করলাম। আমি ? চিকিৎসা হচ্ছে তোমাব, আমি তো একটা বড়িও খাওযাইনি আমাব । শশী আব্ব কথা কাটাকাটি করে না। এ পাগলেব সঙ্গে ঝগড়া করিয়া লাভ কী ? এই কি কলহেব সময় ঠাকুর্দা ? কলহ কে কবছে বাপু ! জ্ঞান হইলে যামিনী কবিরাজের বউ বলে, ঘরে কে, শশী ? কার সঙ্গে কথা কইছ?--চোখে সে দেখিতে পায় না, চোখ দুটি বন্ধ হইয়া গিয়াছে। যামিনী ঘবে আসিয়াছে শুনিলে উতলা হইযা ওঠে, ওকে যেতে বলে শশী, যেতে বলে ওকে, আমাকে ও বিষ খাইযে ম্যাববে,-—যাও না তুমি এ ঘর থেকে, চলে যাও না । যামিনী চলিযা গেলে বলে, বঁচিব তো শশী? বাচবেন বইকী। সেনদিদি খুশি হয়। খানিকক্ষণ চুপ করিয়া পড়িয়া থাকে। শশী কী জানে না, কী অসহ্য তাহাব যাতনা ? সেনদিদিব সহাশক্তি দেখিয়া বিস্ময় মানে শশী । নালিশ নাই, কাতরানি নাই, মাঝে মাঝে শুধু জিজ্ঞাসা কবে বঁচিবে কি না। সেনদিদি বলে, এত ঘাঁটাঘাঁটি করছ তোমার তো ভয় নেই বাবা ? কীসেব ভয় ? ছমাস আগে টিকে নিয়েছি। তখন সেনদিদি বলে, ধন্বতে গেলে তুমি তো আমার ছেলেই। পেটেব ছেলের চেয়ে তোমাকে বেশি ভালোবাসি শশী । কথাটা শশীকে বিচলিত করিয়া দেয়। সেনদিদি যে তাকে ভালোবাসে সে তা জানে বারো বছর বয়স হইতে। কথাটা বলিবার ভঙ্গি তাহাকে অভিভূত করিয়া রাখে। কেমন একটা বালকত্বেব