পাতা:মানিনী - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৪
দারোগার দপ্তর, ১৬১ সংখ্যা।

আমার নিকট পুনরায় আসিও; নতুবা আমার নিকট আসিবার আর কোন প্রয়োজন নাই।”

 মনিবের নিকট এই কথা শ্রবণ করিয়া বিপিন বিষণ্ণবদনে আপন বাসায় প্রত্যাগমন করিলেন, এবং মানিনীকে সকল কথা কহিলেন। উত্তরে মানিনী কহিলেন, “যদি একমাত্র স্ত্রীর খরচের সংস্থান করিয়া উঠিবার ক্ষমতা তোমার না থাকে, তাহা হইলে বিবাহ করিতে তোমাকে কে পরামর্শ দিয়াছিল? তোমার হস্তে পড়িয়া আমি যেরূপ কষ্টে কালযাপন করিতেছি, সেরূপ কষ্ট কখন কোন স্ত্রীলোকে সহ করিয়াছে বলিয়া বোধ হয় না। অপর স্ত্রী হইলে তুমি নিশ্চয়ই দেখিতে, এরূপ কষ্ট সে কখনই সহ করিতে পারিত না; তোমাকে পরিত্যাগ করিয়া এতদিবস সে কোথায় চলিয়া যাইত। আমি তোমাকে নিতান্ত ভালবাসি বলিয়াই এখনও তোমাকে পরিত্যাগ করি নাই।”

 শিক্ষিতা স্ত্রীর কথা শুনিয়া শিক্ষিত যুবক মস্তকে হাত দিয়া সেইস্থানে বসিয়া পড়িলেন, এবং মনে মনে ভাবিতে লাগিলেন, “দাদা আমা অপেক্ষা এত অল্প বেতন পাইয়া কিরূপে খরচ-পত্র নির্ব্বাহ করিয়া থাকেন, আমি তাহার কিছুই বুঝিয়া উঠিতে পারি না। আমি এমন শিক্ষিতা বনিতা পাইয়াও অর্থের অপ্রতুল নিবন্ধন এক দিবসের নিমিত্তও সুখী হইতে পারিলাম না! আর দাদা অশিক্ষিতা স্ত্রীর সহবাসে থাকিয়াও মনের সুখে সর্ব্বদা বাস করিয়া থাকেন! ভগবানের লীলা বোঝা ভার।”

 যে সকল ব্যক্তির নিকট বিপিন ঋণগ্রস্ত, তাঁহারা যখন দেখিলেন যে, তাঁহাদিগের টাকা আদায়ের একমাত্র উপায় বিপিনের চাকরী পর্য্যন্ত গেল, তখন কিরূপ উপায়ে যে তাঁহারা তাঁহাদিগের