পাতা:মানিনী - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
8
দারোগার দপ্তর, ১৬১ সংখ্যা।

 পিতার মৃত্যুর পর রজনীকান্তের উপরই সমস্ত সংসারের ভার পড়িল। সংসারের মধ্যে অপর কেহই ছিল না; কেবল মাত্র রজনীকান্ত, তাহার পত্নী রজকিশোরী, এবং তাহার কনিষ্ঠ ভ্রাতা বিপিন।

 পিতা বর্ত্তমান থাকিতে বিপিন সামান্যমাত্র লেখাপড়া শিখিয়াছিল; এণ্ট্রেন্স পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইয়া এক বৎসর কাল এল-এ ক্লাসে অধ্যয়ন করিবার পরই তাহার পিতার মৃত্যু হয়। কিন্তু রজনীকান্তের সংসারের বিশেষরূপ অনাটন থাকিলেও তিনি অতিকষ্টে বিপিনের লেখাপড়ার সমস্ত ব্যয় নির্ব্বাহ করিয়া আসিতে লাগিলেন। বিপিন ক্রমে এল-এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইয়া বি-এ ক্লাসে অধ্যয়ন করিতে প্রবৃত্ত হইলেন। রজনীকান্ত আপনার স্ত্রী রাজকিশোরীর দুই একখানি অলঙ্কার বিক্রয় করিয়া বিপিনের পুস্তক সকল ক্রয় করিয়া দিলেন।

 বিপিনের বি-এ ক্লাসে অধ্যয়ন করিবার কালে রজনীকান্ত তাহার বিবাহের চেষ্টা দেখিতে লাগিলেন। ভদ্রবংশের একটী সুরূপা কন্যা যাহাতে প্রাপ্ত হইতে পারা যায়, তাহার নিমিত্ত অনেক স্থানে চেষ্টা করিতে লাগিলে। কিন্তু মনোমত একটী কন্যাও দেখিতে পাইলেন না। তথাপি চেষ্টা করিতেও নিরস্ত হইলেন না।

 বিপিনের বিবাহের নিমিত্ত রজনীকান্ত বিশেষরূপে চেষ্টা করিতেছেন, এই কথা ক্রমে বিপিনের কর্ণগোচর হইল। তিনি এই বিষয় জানিতে পারিয়া একদিবস রাজকিশোরীকে কহিলেন, “শুনিলাম যে, দাদা আমার বিবাহের নিমিত্ত