পাতা:মায়া-মৃগ - কাশীন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মায়া-মৃগ।
৩৩

কর। শোকের যদি মূল থাক্‌ত, তবে ক্রমশঃ হ্রাস না হয়ে বরং বর্দ্ধমান হ’ত। অতএব, অমূলক শোকের বশীভূত হওয়া অনুচিত। এক্ষণে যত্নে মনের সান্ত্বনা সম্পাদন কৱ।

 রাম। ভগবন্‌! অকস্মাৎ পিতৃশোক-সুতীক্ষছুরিকা হৃদয়-কন্দরে প্রবিষ্ট হ’লে, অন্তঃকরণ কি আর স্থির থাকতে পারে?—ওঃ! থেকে থেকে হৃদয়-নিলয় যেন জ্ব’লে জ্ব’লে উঠছে।

 বশিষ্ঠ। বৎস রাম! তুমি জ্ঞানবান্‌ হ’য়েও অজ্ঞানের ন্যায়। এরূপ শোকবিমূঢ় হ’চ্ছ কেন? যদি ভবাদৃশ ব্যক্তি শোক-সাগরে নিমগ্ন হ’বে, তবে তা' হ’তে কে আর উত্তীর্ণ হ’তে পা'র্ব্বে?—সারবান্‌ পাষাণ কি কখনো জল-প্রবাহে ভাসমান হয়?—হিমাদ্রি কি কখনো সামান্য বায়ুভরে বিচলিত হয়?—গভীরার্ণব কি কখনো অল্প কারণে আকুলিত হয়? অতএব শোকাবেগ সংবরণ ক’রে লোকের দৃষ্টান্ত স্থানীয় হও। পারত্রিক কার্য্যের অনুষ্ঠান ক’রে পিতার পুত্র-কামনা পূর্ণ করা। আর দেখ, পিতা মাতা ক’রে চির দিন জীবিত থাকেন না; মহারাজও চির দিন পিতৃমান্‌ হ'য়ে রাজ্য পালন ক'র্ত্ত্যে পারেন নাই।