পাতা:মায়ের নাম - জলধর সেন.pdf/৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ন্যায়বাগীশের মন্ত্রদান যা শিখতে পারবে না, আমার রামপ্রসাদ ছ-মাসে-বুঝেছি গিন্নি, এই ছটা মাসে তা শিখে নেবে। সেই জন্যই ত আমি ওকে পড়ার জন্য তাড়না করি না । তুমি দেখে নিও, তোমার এ ছেলে কি হয় ?” গৃহিণী ন্যায়বাগীশ মহাশয়ের বাক্য বেদবাক্য বলিয়াই বিশ্বাস করিতেন। সুতরাং তিনি নীরব হইতেন ; কিন্তু মধ্যে-মধ্যে রামপ্ৰসাদের দুষ্টামি, তার কাণ্ডকারখানা দেখিয়া, তার অবাধ্যতায় বিরক্ত হইয়া তিনি বেদবাক্যের উপরও সন্দেহ করিতে লাগিলেন । রামপ্ৰসাদের বয়স যখন সতর বৎসর হইল, তথন ন্যায়বাগীশ মহাশয় বুঝিতে পারিলেন যে, ছেলেকে এতদিন আদর দিয়া তাহার মস্তক চর্বণ করিয়াছেন ; এত বড় ধীমান পণ্ডিতের পুত্র কি না। এই এত বিষসেও কিছুতেই মুগ্ধবোধের সন্ধির গণ্ডী অতিক্ৰম করিতে পারিল না ; এদিকে কিন্তু অন্যান্য বিদ্যায় সে গ্রামের অতি বড় বয়াটে ছেলেকেও অতিক্রম করিয়া গিয়াছে। ষণ্ডামি গুণ্ডামিতে রামপ্ৰসাদ অদ্বিতীয় ; তামাকের শ্রেণী হইতে প্রোমোসন পাইয়া এখন সে গঞ্জিকার ক্লাশে প্রবিষ্ট হইয়াছে, এ সংবাদও ন্যায়বাগীশ মহাশয়ের কৰ্ণে পৌছিল ; কিন্তু কি মায়াতেই তাহাকে অভিভূত করিয়া ফেলিয়াছিল যে, এত দেখিয়া, এত শুনিয়াও তিনি রামপ্রসাদকে শাসন করিবার জন্য অগ্রসর হইতে পারিলেন না । রামপ্ৰসাদের মাতা পুত্রের গুণের কথা শুনিয়া মধ্যে মধ্যে তাহাকে তিরস্কার করেন ; কিন্তু ন্যায়বাগীশ মহাশয় সে কথা শুনিয়া দুঃখিত হন । এখন তাহার সুর নামিয়া গিয়াছে; তিনি গৃহিণীকে বলেন “শোন গিন্নী, যার অদৃষ্ট যা আছে, তা কেউ খণ্ডাতে পারে না,-স্বয়ং বিধাতারও সে ক্ষমতা নেই। দুঃখ কোরে কিছু লাভ নেই, উপদেশেও কিছু হয় না । ওর অদৃষ্ট যদি ভাল কিছু লেখা থাকে, তা হলে দেখতে পাবে গিন্নি,