পাতা:মাসিক মোহাম্মদী (প্রথম বর্ষ).pdf/৭৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আষাঢ়, ১৩৩৫ সাল ] হজরত ওভািনলোল খেলাফত্র কালে ভূমিল্লব লাজস্ব আরবের একান্ত সন্নিহিত এবং আরবগণের দ্বারাই অধ্যুষিত বলিয়া ইরাক প্রকৃতপক্ষে আরবেরই একটা সুবারূপে পরিগণিত হইত। কিন্তু তথাপি পারস্য রাজগণের আধিপত্যের সময়ে ইরাকে রাজস্বের ভিন্ন ভিন্ন নিয়ম প্ৰচলিত ছিল। কায়কোবাদই সর্বপ্রথম নিয়ম করিয়াছিলেন ভূমির দেয় রাজস্ব তিনি কীপ্তিতে আদায় করা হইবে। সম্রাট নও শেরওয়ার সময় যে নিয়ম প্ৰবৰ্ত্তিত হয় তদনুসারে রাজস্বের পরিমাণ ভূমির উৎপন্নের অৰ্দ্ধেকের বেশী কোনরূপেই হইতে পারিত না । সম্রাট ইয়াজগদ ইহার উপরও কিছু কিছু পরিবর্তন সাধন করিয়াছিলেন এবং খসরু পভেঁজের সময়ে রাজস্বের পরিমাণ বৰ্দ্ধিত হইয়া চরমে উঠিয়াছিল। হজরত ওমর প্রতিনিধি-সভার নিৰ্দেশ অনুসারে ইরাকের রাজস্বের একটী স্থায়ী পরিমাণ নিৰ্দ্ধারণের জন্য ওসমান-বিন হানিফ ও হাফিজ-বিনী-ইমানকে ইরাক জরিপ করিতে পাঠাইলেন। ভূমির জরিপ সংক্রান্ত কাৰ্য্যে ওসমান এমনি পারদর্শী ছিলেন যে, কাজী আবু ইউসুফ তঁহার “কিতাবুল-খিরাজ নামক প্ৰসিদ্ধ গ্রন্থে লিখিয়াছেন—“বস্ত্ৰ ব্যবসায়ী যেমন বিক্রয়কালে বস্ত্রখণ্ডকে চুল পরিমাণও বাদ না দিয়া অতি যত্নসহকারে পরিমাপ করিয়া থাকে, তেমনি ওসমান সমগ্ৰ ভূভাগকে অতি বিচক্ষণতার সহিত মাসের পর মাস ধরিয়া জরিপ করিয়াছিলেন। তঁহার পরিমাপ অনুসারে ইরাকের আয়তন ৯০,০০০ বর্গমাইল নিদিষ্ট হইয়াছিল ; তন্মধ্যে পৰ্বত, বন জঙ্গমা ও নদনদী সকল বাদে কর্মনোপযোগী ভূমি মোট ৩,৬০,০০,০০০ জরিব ( এক জরিব। --- ৬০ বর্গগজ ) বলিয়া স্থিরীকৃত হইয়াছিল । ইরাকের জরিপ সমাধা হইলে খলিফা নির্দেশ কবিলেন-যে সকল ভূমি ও বনজঙ্গলের কোনও মালিক নাই, অথবা যাহা কোন রাজকীয় সম্পত্তি বলিয়া পরিগণিত হইত, অথবা যাহা বৰ্ত্তমানে বিদ্রোহী ও পলাতকগণের সম্পত্তি মধ্যে গণ্য তাহা অতঃপর সরকারে গ্রহণ করা হইবে এবং নুতন প্রার্থনাকারিগণের মধ্যে উহা পত্তন দেওয়া হইবে । এইরূপ ভূমি ও বন জঙ্গলের ‘পত্তনী’ হইতে বার্ষিক ৭০ লক্ষ দিরহাম পাওয়া যাইত এবং তাহ সমুদয়ই জন-হিতকর কাৰ্য্যে ব্যয়িত शशेऊ । नभव्र गभद्र ५शे भभूव्र डूमि ७ बनांौ श्शेरङ 2) سیستم CONSO রাজপুরুষ অথবা ব্যক্তিবিশেষকে তাহার সততা ও কাৰ্য্যের পুরস্কার স্বরূপ অংশবিশেষ জায়গীর দেওয়া হইত।--কিন্তু তাহাদিগকেও সরকারে নির্দিষ্ট কর দিতে হইত। হজরত ওমর ইরাকের ভূমিকর এইরূপ নিদিষ্ট করিয়াছিলেন :- ( ১ ) যে সকল ভূমিতে গোধুম উৎপন্ন হয় তাহার রাজস্ব বাধিক জরিব প্ৰতি ২ দিরাম ; ( ২ ) জওয়ারী ভূমির প্রতি জরিব ১ দিরহাম ; (; ৩ ) ইক্ষুর জমির প্রতি জরিব ৬ দিরহাম ; ( $ ) তুলার জমি প্ৰতি জরিব ৫ দিরহাম ; (, ৫ ) আঙ্গুর ক্ষেত প্ৰতি জরিব ১০ দিরহাম ; (৬) খজুৱ ক্ষেতের প্রতি জরিব ১০ দিরহাম ; (; ৭ ) তিল তিসি সরিষা প্ৰভৃতির প্রতি জরিব ৮ দিরহামি।” কোন কোন স্থানে আবার ভূমির উর্বরা শক্তির তারতম্যানুসারে এই হারের ব্যতিক্রম করা হইত এবং কোথাও জমির প্রতি জরিব ৪ দিরহাম, জওয়ারী জমির ২ দিরহাম, এবং পতিত জমির অৰ্দ্ধ দিরহাম রাজস্ব নির্দিষ্ট ছিল। এই হিসাবে সমগ্র ইরাকের রাজস্ব আটকোটি ষাট লক্ষ দিরহাম ছিল । বিভিন্ন দেশের আলোচনা করিলে দেখিতে পাওয়া যায়, খলিফা ওমরের পূর্বে রাজস্ব সম্বন্ধে কোন দেশেই সুবন্দোবস্ত ছিল না । ফলতঃ হজরত ওমর ভূমির উর্বরাশক্তি ও উৎপন্ন দ্রব্যের বিচার করিয়া যে নীতি অবলম্বন করিয়াছিলেন তাহা তৎকালে যেমন ন্যায়-সঙ্গত বলিয়া বিবেচিত হইত। তেমনি জনসাধারণের পক্ষে ও তাহা অাদায় দেওয়া সহজ। সাধ্য ছিল। এই রাজস্ব সংগ্ৰহ ব্যাপারে বিশেষ সতর্কতা ও সমদৰ্শিতা অবলম্বন করা হইত। ইরাকের ‘জিন্মিগণের নিকট হইতে রাজস্ব আদায় কালে যাহাতে কোনরূপ বল প্রয়োগ বা অত্যাচার অনুষ্ঠিত না হয় তৎপ্ৰতি লক্ষ্য রাখিবার জন্য হজরত ওমর ইরাকের শাসনকৰ্ত্তাদ্বয়ের উপর কড়া আদেশ জারী করিয়াছিলেন । এমন কি তিনি মোসলমানগণের মধ্যে জমিদারী বা তালুকদারী করা অবৈধ বলিয়া নিৰ্দ্ধারিত করা সত্ত্বেও ‘জিম্মি’গণের মধ্যে যাহারা জমিদার বা তালুকদার ছিল তাহাদিগকে চিরাচরিত সুখসুবিধা ভোগ হইতে বঞ্চিত করেন নাই। তাহার এই সুচিন্তিত ও অপক্ষপাত ব্যবস্থায় অচিরকাল মধ্যেই ইরাকের কৃষিকাৰ্য্যের বিশেষ উন্নতি সাধিত হইয়াছিল , সমুদয় পতিত জমি ও বন জঙ্গলাদি কৰ্যনোপযোগী হইয়া নানারূপ ফসলের