পাতা:মা - ম্যাক্সিম গোর্কি - বিমল সেন.pdf/১২৫

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
মা

চলেছে···হেসে বলছে, এবার একটা শক্ত কাজের ভার পেয়েছি।···কাঁচা পথ···জান্‌লায় জান্‌লায় নর-মুণ্ডের ভিড়। এণ্ড্রি বলছে, গাও মা জীবনের জয়গান···মা ঠাট্টা ভেবে রাগছেন···তারপর হঠাৎ পথের পাশের অতল গহ্বরে টলে পড়ে গেলেন···আতঙ্ক-ভরা চীৎকারে মা’র ঘুম ভাঙলো। মা উঠে পড়লেন। তারপর হাত-মুখ না ধুয়েই তিনি ঘর গোছাতে লেগে গেলেন। নিশানের টুকরো তুলে উনোনে দিতে গিয়ে, হঠাৎ কি ভেবে লাল কাপড়টা ছাড়িয়ে নিয়ে ভাঁজ ক’রে পকেটে রাখলেন। জান্‌লা ধুলেন, মেঝেয় ধুলেন, স্নান করলেন, চা চাপালেন···তারপর যেন আর কোনো কাজই রইল না তাঁর! কেবল মনে হ’তে লাগলো, এখন?—এখন কি করি?

 হঠাৎ মনে পড়লো, প্রার্থনা করা তো হয়নি!

 প্রার্থনায় বসলেন···প্রার্থনা করলেন, কিন্তু প্রাণ তবু শূন্য। সময় আর কাটে না!

 এমন সময় নিকোলাই আইভানোভিচ এসে দেখা দিলো। মা পেয়ে ব’লে উঠলেন, এখানে এসেছ কেন? টের পেলেই ধরবে ওরা।

 আইভানোভিচ মাকে আশ্বস্ত ক’রে বললো, এণ্ড্রি-পেভেলের সঙ্গে কথা ছিল, তারা ধরা পড়লে তোমায় আমি শহরে নিয়ে যাবো। যাবে তো, মা!

 যাবো, ওরা যখন ব’লে গেছে—আর তোমার যদি কোনো অসুবিধা না হয়।

 অসুবিধা কিছু হ’বে না, মা। সংসারে লোক মাত্র আমরা দু’টি—আমি আর আমার বোন শোফি। কিন্তু সেও থাকে না, মাঝে মাঝে আসে।···

১২৯