পাতা:মা - ম্যাক্সিম গোর্কি - বিমল সেন.pdf/১৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মা

মেষপাল, আর তাদের সব সময়ের জন্যই চাই একজন মেষ পালক! তা’ শুনে আমি ঠাট্টা করে বললুম, হাঁ, সেই যেমন এক বনে শেয়ালকে ক’রে দেওয়া হল পক্ষী-পালক। দু’দিন বাদে দেখা গেলো, রাশি রাশি পালকই পড়ে আছে বনে, পক্ষী আর নেই। পুরুত আমার দিকে একবার আড়নয়নে চেয়ে বলে যেতে লাগল, চাই ধৈর্য, ঈশ্বরের কাছে কেবল প্রার্থনা করো, প্রভু, আমার ধৈর্য দাও। আমি বললুম, প্রভুটির যে ফুরসুৎ নেই শোনার, নইলে ডাকতে কি আমরা কসুর করছি? পুরুত তখন অগ্নিশর্মা হ’য়ে বললেন, তুই ব্যাটা আবার কী প্রার্থনা ক’রে থাকিস্? আমি বললুম, করি ঠাকুর, একটা প্রার্থন। আমি করি,—যা শুধু আমি কেন, মানুষ মাত্রেই ক’রে থাকে। সেটা হচ্ছে এই, হে ভগবান, দুনিয়ার এই কর্তাগুলোকে দিয়ে একবার ইটের বোঝা বওয়াও, পাথর ভাঙাও, কাঠ ফাড়াও···পুরুত আমার কথাটাও শেষ করতে দিলে না।

 তারপর আচম্‌কা শোফির দিকে চেয়ে প্রশ্ন করলো, আপনি কি ভদ্রমহিলা?

 শোফি এই আকস্মিক, অপ্রত্যাশিত প্রশ্ন শুনে মৃদুকণ্ঠে বললো, আমাকে ভদ্রমহিলা ব’লে মনে করার কারণ?

 রাইবিন হেসে বললো, কারণ? কারণ, ছদ্মবেশও আপনাকে ঢেকে রাখতে পারেনি। ভিজে টেবিলে হাত পড়তেই আপনি শিউরে হাত টেনে নিলেন বিরক্তিভরে, তা’ছাড়া, আমাদের মেয়েদের মেরুদণ্ড অতো সোজা হয় না।

 রাইবিন পাছে শোফিকে অপমান করে ফেলে এই ভয়ে মা বললেন, ইনি আমাদের দলের একজন নামজাদা কর্মী! এই কাজে ইনি মাথার চুল পাকিয়েছেন। তোমার ওসব বলা উচিত নয়।

১৪১