পাতা:মা - ম্যাক্সিম গোর্কি - বিমল সেন.pdf/৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মা

 মা জানতেন, এসবের মূলে তাঁরই ছেলে। তাঁর আনন্দও হ’ত, শঙ্কাও হ’ত। একদিন সন্ধ্যায় এসে সেই পড়শী বুড়ি খবর দিয়ে গেলো, নাও এইবার, ঠ্যালা সামলাও; আজ রাতেই পুলিস আসছে, তোমাদের বাড়ি আর নিকোলাইদের বাড়ি, আর মেজিনদের বাড়ি...

 মা ধপ্ ক’রে চেয়ারে বসে পড়লেন,—তাঁর মাথা ঘুরছে, সমস্ত শক্তি লোপ পেয়ে গেছে। কিন্তু ছেলের আসন্ন বিপদের কথা মনে পড়তেই সাহসে তাঁকে বুক বেঁধে উঠতে হল। প্রথমেই তিনি মেজিনকে খবরটা দিয়ে এলেন, মেজিন বলে দিলো, তুমি যাও, মা, ওদের আমি খবর পাঠাচ্ছি। পুলিস বেড়ায় ডালে ডালে, আমরা বেড়াই পাতায় পাতায়।

 মা বাড়ি ফিরে এসে সমস্ত কাগজপত্র বই বুকে গুঁজে অস্থিরভাবে পায়চারি করতে লাগলেন...মনে করলেন, পেভেল এক্ষুণি কাজ ফেলে ছুটে বাড়ি আসবে। কিন্তু পেভেল এলো না। মা অবসন্ন হ’য়ে রান্নাঘরের বেঞ্চের ওপর বসে পড়লেন—পেভেল ও এণ্ড্রি কারখানা হ’তে ফিরে এলো...মা তখনো সেই অবস্থায় ব’সে। জিগ্যেস করলেন, জানো সব?

 হাঁ। তোমার কি ভয় হচ্ছে, মা?—পেভেল জিগ্যেস করলো।

 এণ্ড্রি বললো, ভয় করে লাভ কি? ভয় করলে কি বিপদ উদ্ধার হয়? হয় না, তবে?

 পেভেল বললো, উনুনটিও বুঝি ধরাওনি, মা!

 মা বইগুলি চেপে বসেছিলেন। উঠে দাঁড়িয়ে তা’ দেখিয়ে বললেন, ঐগুলো নিয়েই তো ব্যস্ত ছিলাম, সারাক্ষণ...

৪১