পাতা:মা - ম্যাক্সিম গোর্কি - বিমল সেন.pdf/৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মা

মানুষ অজ্ঞাতসারে এগােয় তার কবরের দিকে। তবু তারা খুশি···তাড়ি আছে, আমােদ আছে। আর কি চাই।

 ছুটির দিনে মজুরেরা ঘুমােয় দশটা তক···তারপর উঠে’ সব চেয়ে পছন্দসই পােশাকটি পরে গির্জায় যায়···যাবার আগে ধর্ম-বিমুখতার অন্য ছােটদের একচোট ব’কে নেয়। ফিরে এসে পিরগ খায়; তারপর সন্ধ্যাতক ঘুমােয়। সন্ধ্যায় পথের ওপর আনন্দের মেলা বসে। পথ শুকনাে হ’ক, তবু ওভার-স্যু যাদের আছে পরে বেরোয়···বর্ষা না থাকলেও ছাতা নিয়ে পথে নামে! যার যা আছে তাই নিয়ে সে স্যাঙ্গাতদের ছাড়িয়ে উঠতে চায়। পরস্পর দেখা হ’লে কল-কারখানার কথাই বলে···ফোরম্যানকে গালি দেয়, কল-সংক্রান্ত কথা নিয়েই মাথা ঘামায়। ঘরে ফিরে স্ত্রীর সঙ্গে কলহ করে, মাঝে মাঝে তাদের নির্মমভাবে মারে। যুবকেরা মদ খায়, এর-ওর বাড়ি আড্ডা দিয়ে ফিরে, অশ্লীল গান গায়, নাচে, কুৎসিৎ কথা উচ্চারণ করে। অনেক রাতে বাড়ি ফিরে’ আসে···নােংরা গা, ছেঁড়া পোশাক, ছিন্ন মুখ···কাকে মেরেছে তারই বড়াই, কার কাছে পিটুনী খেয়েছে তারই অপমানের কান্না। কখনাে কখনাে বাপমা-ই তাদের তুলে আনেন পথ কিংবা তাড়িখানা থেকে, মাতাল অবস্থায়। কটুকণ্ঠে গালমন্দ করেন···স্পঞ্জের মতো মদসিক্ত শরীরে দু’দশ ঘা বসান···তারপর রীতিমত শুইয়ে দেন···পরদিন ভােরে ঘুম ভাঙিয়ে কাজে পাঠান।

 বহু বছর ব্যাপী অবসাদের ফলে ক্ষুধা-শক্তি তাদের লােপ পেয়েছে···ক্ষুধা উদ্রেক করার জন্য তারা গ্লাসের পর গ্লাস মদ চালায়। ক্রমে মদের মাত্রা চড়ে যায়···প্রত্যেকের প্রাণেই মাথা তু’লে দাঁড়ায় একটা অবােধ্য পীড়াদায়ক অসন্তুষ্টি, যা’ ভাষায় ফুটতে চায়। এই অশান্তিকর উদ্বেগের

১০