পাতা:মা - ম্যাক্সিম গোর্কি - বিমল সেন.pdf/৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মা

 তাঁর ছেলে পেভেলের বয়স যখন চৌদ্দ, তখন একদিন তার চুল ধ’রে টানতে গেলাে। পেভেল পলকে একটা হাতুড়ি তুলে নিয়ে বললাে, ছুঁয়ােনা বলছি।

 কী!—পিতা কৈফিয়ৎ তলবের সুরে গর্জে উঠলাে।

 পেভেল অবিচলিত কণ্ঠে বললাে, যথেষ্ট হয়েছে, আর আমি প’ড়ে প’ড়ে মার খাচ্ছি না। বলে হাতুড়িটা সে একবার সদর্পে মাথাব ওপর ঘােরালাে।

 পিতা তার দিকে চাইলেন, তারপর লােমবহুল হাত দু’খানা ছেলের পিঠে রেখে হেসে বললেন, বহুৎ আচ্ছা! ধীরে ধীরে তার বুক ভেঙে একটা দীর্ঘনিশ্বাস বেরিয়ে এলাে, ব’লে উঠলেন, ‘নারকী কীট’···

 ···এর কিছুকাল পরে বউকে একদিন ডেকে বললেন, আমার কাছে আর টাকা চেয়ােনা, ছেলেই এবার থেকে তােমায় খাওয়াবে।

 স্ত্রী সাহস করে প্রশ্ন করলাে, আর তুমি বুঝি মদ খেয়ে সব ওড়াবে?

 সে কথায় তাের কাজ কি, ‘নারকী কীট’ কোথাকার!

 সেই থেকে মরণ অবধি তিন বছর ছেলেকে সে চোখ চেয়ে দেখেনি, ছেলের সঙ্গে কথা বলেনি।

 মরলে সে ভীষণ যন্ত্রণা পেয়ে। পাঁচদিন ধরে বিছানায় গড়াচ্ছে···সমস্ত অঙ্গ কালাে হয়ে গেছে···দাঁত কট্‌মট্ করছে···চোখ বােজা! মাঝে মাঝে ব্যথা যখন বড়ই অসহ্য হয়, বউকে ডেকে বলে, আর্সেনিক দাও, বিষ দাও।

 বউ ডাক্তার ডাকলাে। ডাক্তার পুলটিশের ব্যবস্থা করলেন, বললেন, অচিরে একে হাসপাতালে নিয়ে অস্ত্র করা দরকার।

১৩