পাতা:মিবাররাজ.djvu/১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চতুর্থ পরিচ্ছেদ
১১

তাহার এই স্বাভাবিক অধিকার আর কাহাকেও সে দিতে পারে না। ভীল অসভ্য, তাহার স্বাভাবিক, অবিকৃত হৃদয়ে প্রেমেরই একাধিপত্য, তাই সে ক্ষমতাকে তাচ্ছিল্য করিতে পারে প্রেমকে পারে না। সে যে এমন করিয়া ডাবিয়া চিন্তিয়া, তাহার অধিকার অনধিকার বুঝিয়া সুঝিয়া এরূপ নিষ্পত্তিতে আসে তাহা নহে, সে আর কিছুই বুঝে না— পিতার স্নেহের অভাব দেখিলে তাহার যে কষ্ট হয় সে কেবল তাহাই বুঝে; সে আর কিছু ভাবে না যুবকের প্রতি পিতার স্নেহ দেখিলে তাহার যে কষ্ট হয়—তাহাই শুধু সে ভাবে; ভাবিতে ভাবিতে অবশেষে এক রকম করিয়া সে কষ্টটা তখনকার মত তাহার মনে মিলাইয়া পড়ে, কিন্তু এইরূপে যুবকের উপর তাহার যে একটা রাগের ভাব আসিয়া পড়ে তাহা উত্তরোত্তর ক্রমশই তাহার মনের মধ্যে জমা হইতে থাকে।

 এইরূপ মনের অবস্থায় মৃগয়া দিনের সমস্ত ঘটনাই তাহার কষ্টের কারণ হইয়া উঠিল—বিশেষতঃ যখন পিতা বলিলেন—“তুই কেন ওডার মত হইলিনে” তখন আর ভীল পুত্রের দুঃখ রাখিতে স্থান হইল না, —মনুষ্যের গর্ব্বে আঘাত লাগিলে বড় আঘাত লাগে, এতদিন কত ঘটনায় যাহা না হইয়াছে আজ ঐ সামান্য কথাটিতে তাহা সাধিত হইল। এইরূপই হইয়া থাকে; ধূঁয়াইতে অনেক সময় যায়—কিন্তু জ্বলিয়া উঠিতে মুহূর্তও লাগে না!