পাতা:মিবার-গৌরব-কথা - হেমলতা দেবী.pdf/৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ধাত্রী পান্না।
৪৩

রক্ষা করিবার জন্য অনেকে চিতােরে প্রত্যাবর্ত্তন করিল। বিক্রমজিৎ অতুল সাহসের সহিত যুদ্ধ করিতে থাকিলেন। তাঁহার পত্নী বীর নারী জহর বাই বর্ম্মে দেহ আবৃত করিয়া সসৈন্য শক্রর সহিত সমরে অবতীর্ণ হইয়া অতুল সাহস দেখাইয়া রণভূমে প্রাণত্যাগ করিলেন— তথাপি চিতাের রক্ষা করা অসম্ভব হইল। তখন চিতােরের বীরগণ রাজ বলির উদ্যোগ করিল।— চিতােরের রাজলক্ষ্মীর সন্তোষের জন্য রাজমুকুটধারী রাণাকে যুদ্ধক্ষেত্রে প্রাণত্যাগ করিতে হইবে; নতুবা চিতােরের আর রক্ষা নাই। রাণা বিক্রমজিৎ রণভূমিতে এক্ষণে সংগ্রামসিংহের ভ্রাতা সূর্য্যমল্লের বীর পুত্র বাঘজী জীবনাহুতি দিতে সম্মত হইলেন। তাঁহার মস্তকে রাজমুকুট ও রাজছত্র শােভিত হইল। তিনি অতুল বীরত্বের সহিত যুদ্ধ করিয়া যুদ্ধক্ষেত্রেই প্রাণ বিসর্জ্জন করিলেন। তথাপি চিতাের রক্ষা অসম্ভব হইল, তখন রাজপুতবাসিনীগণ জহর ব্রতের[১] অনুষ্ঠান করিল।—ত্রয়ােদশ সহস্র রাজ-


  1. জহর ব্রত রাজপুত রমণীর এক ভীষণ ব্রত। শত্রু হস্তে পতিত হবার সম্ভাবনা দেখিলে সমুদায় রাজপুত রমণী সমবেত হইয়া শিশু সন্তানদিগকে ক্রোড়ে করিয়া ভীষণ অগ্নিকুণ্ডে লম্ফ দিয়া প্রাণত্যাগ করিতেন।