পাতা:মিষ্টান্ন-পাক.djvu/১৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৭২
মিষ্টান্ন-পাক

 ভাল রকম তাজা আদা বাছিয়া লইবে। কারণ, উহা পচা কিংবা অধিক দিনের হইলে, মোরব্বার আস্বাদন ভাল হইবে না। একটি শলাকা দ্বারা খোসা ছাড়ান আদা গুলির সর্ব্বাঙ্গ ছিদ্র করিবে। অনন্তর, একটি হাঁড়ি চূণের জলে পূর্ণ করিয়া, তাহাতে ঐ আদা ঢালিয়া দিয়া, তিন দিন পর্য্যন্ত ভিজাইয়া রাখিবে। চারি দিনের দিন, ঐ আদাগুলি চূণের জল হইতে তুলিয়া, পরিষ্কৃত শীতল জলে চারি পাঁচ বার বেশ করিয়া ধুইয়া ফেলিবে।

 এখন, কুট্টিত জামের পাতা দুই সের জলের সহিত মিশ্রিত করিয়া, তাহাতে ঐ আদাগুলি দিয়া জ্বালে চড়াইবে, এবং দুইবার উথলিয়া উঠিলে-ই নামাইয়া, জল হইতে আদা তুলিয়া, পুনর্ব্বার পরিষ্কৃত শীতল জলে ছয় সাত বার ধৌত করিবে। এই পরিষ্কৃত ধৌত আদাগুলি একটি পাত্রে রাখিয়া, অপর আর একটি পাক-পাত্রে একতার বন্দ চিনির রস জ্বালে চড়াইবে, এবং তাহা ফুটিয়া উঠিলে, আদাগুলি ঢালিয়া দিয়া আস্তে আস্তে নাড়িয়া দিতে থাকিবে। এইরূপ অবস্থায় অল্পক্ষণ জ্বালে থাকিলে, উহা গাঢ় অর্থাৎ ঘন হইয়া আসিবে। এই সময় পাক-পাত্রটি উনান হইতে নামাইয়া, তাহাতে গোলাপ জল ও এলাচ মিশ্রিত করিয়া, ঢালিয়া রাখিবে। এইরূপ নিয়মে প্রস্তুত করা আদাকে আদার মোরব্বা কহিয়া থাকে। আদার মোরব্বা অত্যন্ত উপকারী। অনেক প্রকার রোগে উহা ঔষধ ও পথ্যরূপে চিকিৎসকেরা ব্যবহার করিয়া থাকেন। ভোজনের পূর্ব্বে লবণযুক্ত আর্দ্রক আহার করিলে, বিস্তর উপকার হইয়া থাকে। কারণ, তাহাতে অগ্নি সন্দীপিত হয়, আহারে রুচি জন্মে এবং জিহ্বা ও কণ্ঠ বিশোধিত হয়। কুষ্ঠ, পাণ্ডু, কৃচ্ছ্র, রক্তপিত্ত, ব্রণ, দাহ প্রভৃতি রোগে এবং গ্রীষ্ম ও শরৎকালে আর্দ্রক ভক্ষণে অত্যন্ত উপকার।

 বৈদ্যশাস্ত্র-মতে আদার গুণ:—ভেদী, গুরু, তীক্ষ্ণ, উষ্ণ, দীপন, রুক্ষ, বাতঘ্ন এবং কফ-নাশক।