পাতা:মিষ্টান্ন-পাক.djvu/১৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নবম পরিচ্ছেদ।
১৭৩

কল-আঁটি বা তাল-আঁটির মোরব্বা।

 সুপক্ক তাল-আঁটি মাটিতে ফেলিয়া রাখিলে-ই, তাহা হইতে কল নির্গত হইয়া থাকে। ঐ আঁটি একটু অধিক মাটি চাপা রাখিলে-ই ভাল হয়; কারণ, অধিক মাটির নীচে থাকিলে, আঁটির শাঁসে বেশ রস সঞ্চিত হইতে পারে। শাঁস রসাল হইলে, তাহা অতি সুখাদ্য হইয়া থাকে। সচরাচর আশ্বিন ও অগ্রহায়ণের মধ্যে-ই প্রায় সমুদায় আঁটিতে শাঁস সঞ্চয় হইতে দেখা যায়। তাল-আঁটির মোরব্বা করিতে হইলে, আঁটির ভিতর হইতে গোটা অর্থাৎ আস্ত শাঁস তুলিতে পারিলে ভাল হয়। উহা কাটিয়া খণ্ড খণ্ড হইলে, মোরব্বার পক্ষে তত সুখাদ্য হয় না। ঘৃতে ভাজিলে তাহা ফুলিয়া উঠে না, অধিকন্তু তুব্‌ড়াইয়া যায়। সুতরাং, তাহার মধ্যে রস প্রবেশ করিতে পারে না। গোটা শাঁসটি জলে না ধুইয়া পরিষ্কৃত শুষ্ক নেকড়া দ্বারা পুঁছিয়া লওয়া আবশ্যক। জলে ধুইলে মিষ্টতা কমিয়া, কিছু পান্সা হইবার সম্ভাবনা। এখন শাঁসের পরিমাণ অনুসারে ঘৃত জ্বালে চড়াইবে। এস্থলে একটি কথা মনে রাখা উচিত, যে টাকা গাওয়া ঘৃত হইলে-ই ভাল হয়, আর ঘৃত একটু অধিক হইলে-ই উত্তম, কারণ, শাঁসগুলি ভাসা ঘৃতে ভাজিতে পারিলে তাহা ফুলিয়া উঠে। উহা অধিক কড়া করিয়া না ভাজিয়া সামান্যরূপ ভাজিতে হইবে।

 এদিকে, চিনির একতার বন্দের রস জ্বালে চড়াইয়া, তাহা ফুটিয়া আসিলে, তাহাতে ভর্জ্জিত শাঁস গুলি ঢালিয়া দিয়া, মধ্যে মধ্যে নাড়িতে হইবে, এবং অন্যান্য মোরব্বার ন্যায় পাক করিয়া নামাইয়া লইবে। কেহ কেহ আবার উহা নামাইবার সময়, উপযুক্ত পরিমাণে ছোট এলাচের গুঁড়া এবং সামান্যরূপ কর্পূর-ও দিয়া থাকেন। আমরা পরীক্ষা করিয়া দেখিয়াছি, কর্পূরের পরিবর্ত্তে দুই এক বিন্দু গোলাপী আতর দিলে, উহা সমধিক সুখাদ্য