শ্যক। স্বহস্তে কিছু দিন পাক অর্থাৎ ‘ভিয়ান’ না করিলে, উহাতে অভিজ্ঞতা জন্মে না। অভিজ্ঞতা না জন্মিলে, কখন-ই সন্দেশ ভাল হইবার কথা নহে। উপকরণের উৎকৃষ্টতা, তাড়ু সঞ্চালনে নিপুণতা এবং পাকের অবস্থা সম্বন্ধে অভিজ্ঞতার প্রতি দৃষ্টি রাখিয়া, সন্দেশ প্রস্তুত করিলে, উহা নিশ্চয়-ই উপাদেয় হইবার কথা।
প্রতিবারে যে পরিমিত ছানা ও চিনি লইয়া, সন্দেশ প্রস্তুত করিতে হয়, তাহাকে ‘পাক’ কহে। কোন প্রকার সন্দেশে কি প্রকার পাকের ব্যবস্থা, তাহা স্থানান্তরে লিখিত হইল।
জ্বালের দোষে-ও অনেক সময় সন্দেশ মন্দ হইয়া থাকে। তীব্র জ্বাল-ই সন্দেশের পক্ষে প্রশস্ত। এস্থলে আর একটি কথা মনে রাখা আবশ্যক, জ্বালের সঙ্গে সঙ্গে তাড়ু সঞ্চালনের প্রতি-ও বিশেষ দৃষ্টি রাখিতে হয়। পাক যত শেষ হইতে থাকে, সেই সঙ্গে তত-ই তাড়ু সঞ্চালন করা উচিত।
চিনির মধ্যে নানা প্রকার চিনি দেখিতে পাওয়া যায়; ফলতঃ চিনি যে পরিমাণে শুভ্র হইবে, সন্দেশ-ও সেই পরিমাণে পরিষ্কৃত হইবার কথা। দেশী চিনির মধ্যে কাশীর চিনি-ই অতি উৎকৃষ্ট। এতদ্ভিন্ন আজি কালি কলের চিনি-ও ব্যবহৃত হইতে আরম্ভ হইয়াছে। কলের চিনি দ্বারা সন্দেশ প্রস্তুত করিলে; তদ্দ্বারা দুই প্রকার লাভ হইতে দেখা যায়। কলের চিনির সন্দেশ অতি শুভ্র। এতদ্ভিন্ন কলের চিনির মধ্যে বিটপালঙ্গের যে চিনি ব্যবহৃত হইতে দেখা যায়, দেশী চিনির ন্যায় উহা তত মিষ্ট নহে। এজন্য ছানার পরিমাণ কিছু অল্প হইলে-ও, ভোক্তাগণ তাহা অনুভব করিতে সমর্থ হন না। ইহা দ্বারা ব্যবসায়িগণের কিছু লাভ হইয়া থাকে। চিনি যে পরিমাণে পরিষ্কৃত হইবে, সের প্রতি সেই পরিমাণে রস হইয়া থাকে। উৎকৃষ্ট চিনিতে প্রতি সেরে পনর ছটাক রস পাওয়া যায়। আবার চিনি যত অপরিষ্কৃত হইবে, সের প্রতি সেই নিয়মে রস কম হইয়া থাকে।