পাতা:মিষ্টান্ন-পাক.djvu/২২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
একাদশ পরিচ্ছেদ।
২১৩

 দুগ্ধের উৎকর্ষানুসারে পরমান্নে মিষ্ট ব্যবহৃত হইয়া থাকে। খাঁটি দুগ্ধে সের করা তিন ছটাক মিষ্ট দিলে যথেষ্ট হয়। আর জলীয় দুগ্ধে মিষ্টের পরিমাণ অধিক দিতে হয়। কিন্তু অধিক মিষ্ট দিলে-ও, তাহা কখন-ই খাঁটি দুগ্ধের ন্যার স্বস্বাদু হয় না।

 পায়সে গুড়, চিনি, বাতাসা এবং মধু ব্যবহৃত হইয়া থাকে। গুড়ের মধ্যে নূতন খেজুরের নলেন গুড়ে উত্তম পরমান্ন হয়। ইক্ষু গুড় দ্বারা পায়স পাক করিলে, দুধ ছিঁড়িয়া যাইবার সম্ভাবনা। কারণ, ইক্ষু গুড়ে এক প্রকার অম্ল রস আছে, বিশেষতঃ উহা পুরাতন হইলে, অম্ল রস প্রবল হইয়া থাকে। গুড় কিংবা চিনি পায়সে ব্যবহার করিতে হইলে, উহা দুগ্ধে গুলিয়া কাপড়ে ছাঁকিয়া লইলে ভাল হয়, কারণ, তদ্দ্বারা মিষ্ট-দ্রব্যের ময়লাদি পরিষ্কৃত হইয়া থাকে। অনেক সময় দেখা যায়, পাক-পাত্রের দোষে-ও পরমান্নের বর্ণ ময়লা হয় এজন্য পাক-পাত্র বিশেষ করিয়া পরিষ্কার করিয়া লওয়া আবশ্যক।

 পায়স পাকে প্রথমে যেরূপ তীব্র জ্বাল দিতে হয়, দুগ্ধ মরিয়া আসিলে, জ্বালের আঁচ কমাইয়া ঘন ঘন নাড়িতে হয়। কারণ, এই সময় আঁকিয়া উঠিবার বিশেষ সম্ভাবনা। পায়স চাপ চাপ হইলে তাল তত সুখাদ্য হয় না। পায়স গাঢ় ক্ষীরের ন্যায় করা আবশ্যক।

 পিষ্টকের মধ্যে দুই একটি ভিন্ন, অধিকাংশ-ই একপ্রকার অখাদ্য বলিলে-ই হয়। কারণ, যে সকল উপাদানে ঐ সমস্ত দ্রব্য প্রস্তুত হয়, তৎসমুদায়-ই প্রায় পীড়া-দায়ক। কিন্তু হইলে কি হয়? বৎসরের মধ্যে সময় বিশেষে পিষ্টকাহার হিন্দু-জাতির নিকট ধর্ম্মের অঙ্গ বলিয়া পরিগণিত। বিশেষতঃ, স্ত্রীলোকেরা পিষ্টকাদিতে অত্যন্ত প্রিয়। এই থাদ্য-দ্রব্য পাক সম্বন্ধে এ দেশে কুলকামিনীদিগের মধ্যে নানা প্রকার নিপুণতা-ও দেখিতে পাওয়া যায়।

 পূর্ব্বে-ই বলা হইয়াছে, পিষ্টকের মধ্যে দুই একটি পিষ্টক বাস্তবিক