পাতা:মিষ্টান্ন-পাক.djvu/৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৪
মিষ্টান্ন-পাক।

 দধি বা দুগ্ধ মন্থন করিয়া যে ঘৃতের ভাগ পাওয়া যায়, তাহাকে-ই নবনীত বা মাখন বলে। মাখন তুলিয়া উত্তমরূপে ধুইয়া ও ফেটাইয়া লওয়া কর্ত্তব্য। তাহা হইলে উহা টাটকা থাকে এবং বিস্বাদ হয় না। মাখন টাট্‌কা রাখিবার জন্য উহাতে লবণ-ও মিশান হইয়া থাকে। বাতাস না লাগে, এরূপ করিয়া কোন পাত্র-মধ্যে রাখিয়া দিলে-ও, মাখন টাটকা থাকে। প্রত্যহ জল বদলাইয়া তাহাতে রাখিলে-ও মাখন টাটকা থাকিবে।

 যাহাদিগের পাক-শক্তি ক্ষীণ, তাহারা-ও বিশুদ্ধ টাটকা মাখন সহজে-ই জীর্ণ করিতে পারে; কিন্তু অধিক পরিমাণে ভক্ষণ করা কর্ত্তব্য নহে। বাসী, বিস্বাদ, দুর্গন্ধ বা উত্তপ্ত মাখন অজীর্ণ ও অন্যান্য রোগে অখাদ্য; খাইলে আমাশয় উৎপাদন করিবে। মাখন বিশুদ্ধ কি না, দৃষ্টি, আস্বাদ ও গন্ধ দ্বারা তাহা অনায়াসে-ই জানিতে পারা যায়। বিশুদ্ধ মাখনের বর্ণ উজ্জ্বল-পীত। মাথনে একখানি ছুরী শীঘ্র চালাইলে, যদি ডোবার মত দেখা যায়, তাহা হইলে জানিবে যে, তাহাতে অন্য দ্রব্য মিশান হইয়াছে। বিশুদ্ধ মাখন গলাইলে, অতি পরিষ্কৃত ঘৃত প্রস্তুত হইবে। বিশুদ্ধ মাখন জিহ্বায় দিলে সহজে-ই গলিয়া যাইবে, এবং বেশ মোলায়েম বোধ হইবে। মাখনের সুগন্ধ অধিকদিন থাকে। সুতরাং, মাখন ভাল কি মন্দ, গন্ধ দ্বারা তাহা ততদূর ঠিক করিয়া জানা যায় না।

 আয়ুর্ব্বেদ মতে মাখনের সাধারণ গুণ।—মধুর রস, শীতল, রুচি-কর, মল-রোধক, বর্ণ-কারক, কান্তি-জনক, বল ও শুক্রের বৃদ্ধি-কারক, পুষ্টি-কর, চক্ষুর হিতকর, শ্রান্তি-নাশক, বাত-কফ-নিবারক এবং সর্ব্বাঙ্গ-শূল, কাস, ক্ষয়, কৃশতা, শুক্র-হীনতা, স্নায়বিক দৌর্ব্বল্য ও বায়ু-রোগ-মাত্রে-ই বিশেষ উপকারী।