এজন্য হিন্দুজাতির মধ্যে দুগ্ধজাত খাদ্য বহুল পরিমাণে আদরের সহিত প্রস্তুত হইয়া থাকে।
নির্জ্জলা দুগ্ধের ক্ষীর প্রস্তুত করিলে, তদুৎপন্ন যাবতীয় দ্রব্যের বর্ণ উজ্জল-শুভ্র হইয়া থাকে। জল-মিশ্রিত দুগ্ধের ক্ষীর ভালরূপ সাদা হয় না, প্রত্যুত উহার বর্ণ কাল হইয়া থাকে। এজন্য খাঁটি দুগ্ধদ্বারা ক্ষীর প্রস্তুত করা উচিত।
ক্ষীরের ছাঁচ প্রভৃতি প্রস্তুত করিতে হইলে, দুধ মারিয়া, মোমের মত অর্থাৎ কাদার ন্যায় ক্ষীর তৈয়ার করিতে হয়। এই ক্ষীর দ্বারা যে কোন আকারের খাদ্য-দ্রব্য গঠন করা যাইতে পারে।
পাথরের উপর নরুণ দ্বারা নানাপ্রকার খোদাই কাজ করিতে হয়। অর্থাৎ লতা-পাতা প্রভৃতি বহুবিধ মনোহর দৃশ্য খোদাই করিলে, ছাঁচ প্রস্তুত হইয়া থাকে।
মোমের মত ক্ষীর প্রস্তুত হইলে, সেই ক্ষীরের এক একটি গুটি কাটিয়া লও, এবং পূর্ব্বোক্ত ছাঁচে অল্প পরিমাণে গরম ঘৃত মাখাইয়া তাহাতে ঐ গুটি আস্তে আস্তে টিপিয়া, ছাঁচের আকার-পরিমাণ বিস্তৃত করিলে, ছাঁচ প্রস্তুত হইল। অনন্তর অতি ধীরে ধীরে তাহা ছাঁচ হইতে তুলিয়া কাপড়ের উপর রাখিবে। অল্প-ক্ষণ থাকিলে, উহা কঠিন হইয়া আসিবে। ফল-কথা, ছাঁচের আকার ও কারিকুরী অনুসারে ক্ষীরের ছাঁচ প্রস্তুত হইয়া থাকে। সুতরাং পাতা, লতা এবং ফুল, ফল প্রভৃতি যে কোন আকারে প্রস্তুত হইবে, ক্ষীরের ছাঁচও ঠিক সেইরূপ আকারের তৈয়ার হইবে। এই সকল ক্ষীর-জাত দ্রব্য জল-খাবারের পাত্র প্রভৃতি সাজাইবার পক্ষে উত্তম। ক্ষীরের দ্রব্য অধিক দিন রাখিলে, তাহা হইতে একপ্রকার দুর্গন্ধ নির্গত হয়; সুতরাং তখন তাহা খাদ্যের পক্ষে সুখ-জনক হয় না।