পাতা:মিষ্টান্ন-পাক.djvu/৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫২
মিষ্টান্ন পাক।

তবে ঐ সেটে মাটিতে পড়িয়া নষ্ট হইয়া থাকে। কিন্তু গাম্‌লার উপর রাখিলে, সে অপচয় সহ্য করিতে হয় না। দুই তিন দিন এইরূপ অবস্থায় থাকিলে, গুড় হইতে অধিক পরিমাণে সেটে নির্গত হইয়া থাকে। পরে ঐ পেতের সারগুড়ে জলের ছিটা দিয়া, নদী বা পুষ্করিণী প্রভৃতিতে যে এক প্রকার পাটা শেওলা (শৈবাল) জন্মিয়া থাকে, তাহা পেতের গুড়ের উপর চাপা দিয়া রাখিতে হয়। শেওলা-চাপা গুড় আটদিনের মধ্যে-ই সাদা রঙের হইয়া উঠে। এই সময় একটি কথা মনে রাখা উচিত যে, পেতের উপরিভাগের গুড়, যেরূপ সাদা রঙের হইয়া থাকে, ভিতরের গুড় সেরূপ হয় না। এজন্য যতদূর সাদা দেখা যায়, সেই পর্য্যন্ত চাঁচিয়া তুলিয়া লইতে হয়। পেতের সাদা গুড় চাঁচিয়া লইয়া, অবশিষ্ট লালী গুড়ের উপর পূর্ব্ববৎ শেওলা চাপা দিয়া রাখিতে হয় এবং নিয়মিত সময়ে অর্থাৎ পেতের উপরিভাগের গুড় সাদা হইলে, তাহা-ও আবার চাঁচিয়া লইতে হয়। এইরূপ নিয়মে সমস্ত পেতের গুড় চাঁচিয়া লইবে।

 পেতে হইতে প্রথমে যে সাদা গুড় তুলিয়া লওয়া হইয়া থাকে, তাহাতে উত্তম চিনি হয় না। এজন্য উহা দ্বারা পুনর্ব্বার ভাল চিনি তৈয়ার করিয়া লইতে হয়। অর্থাৎ সেই দোলো বা খাঁড় একখানি খুলিতে অল্প পরিমাণে জল মিশ্রিত করিয়া, জ্বালে চড়াইতে হয়, এবং মধ্যে মধ্যে তাহাতে জল-মিশ্রিত দুগ্ধের ছিটা মারিতে হয়। দুগ্ধ-মিশ্রিত জল দিলে, উহার যাবতীয় ময়লা অর্থাৎ গাদ উপরিভাগে ভাসিয়া উঠে। কিন্তু প্রথম দিনের গাদ না ফাটিয়া জ্বাল হইতে নামাইয়া, অন্য একটি দ্রব্য চাপা দিয়া রাখিতে হয়। প্রথম দিনের ন্যায় দ্বিতীয় দিনে-ও, আবার উহা জ্বালে চড়াইধে, দুগ্ধ-মিশ্রিত জলের ছিটা দিয়া গাদ তুলিবে। দেখা যাইবে, সমুদায় গাদ তুলিয়া লওয়া হইয়াছে, তখন তাহা জ্বাল হইতে নামাইয়া খোলার গায়ে তাড়ু দ্বারা অনবরত নাড়িতে