পাতা:মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্রহ প্রথম খণ্ড.djvu/১১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এর উপায় কি ? X o * নয়ন-( পদাঘাত করিয়া কিঞ্চিং জোরে কান্দিতে কান্দিতে ) তোর কথা আবার শুনব ? আমি এ প্রাণ রাখব না। রাধা—আমি চললেম, মুক্তকেশীকে খুন করতে এখনই চললেম । যা বলেছি তাই করবো। মুক্তকেশীকে খুন করব (গাত্ৰোখান ) মারব, খুন করবে। মুক্তকেশীকে খুন করবো তাতে আমার কি ?—(পদচারণ করিতে করিতে ) সে বেঁচে থাকলে আমার প্রাণকে হারাবো, নয়নতারাকে হারাবো। কপালে যাই থাক চললেম । ( ছুরি লইয়া বেগে প্রস্থান ) নয়ন— শয্যা হইতে উঠিয়া দুই-তিন পদ অগ্রসর, একটু উচ্চৈঃস্বরে ] দেখ ! মিছেমিছি ঘরে ফিরে এলে, আর আমায় জীয়ন্ত পাবে না । ( ঘরের জিনিসপত্র শৃঙ্খলা করিয়া রাখিতে রাখিতে স্বগত ) মুক্তকেশী গেলেই এদিকের পথ খুলাশা হয় । আর যাবে কোথা ? নয়নতারা বাট মারবে আর দুহাতে লুটবে । ওর যা যা আছে সকলই হাত কবব । মুক্তকেশীর ভাল ভাল অলঙ্কার আছে শুনেছি, সেগুলো তো কালকেই হাত করব । এখন একটু আড কবে বসে যা ইচ্ছা তাই করতে পারব। এখনও কি আমি হাবা আছি ? মা’র চেয়ে ঝি যে দু’হাত বেড়ে গেল, তবু মার কান্দনি গেল না । যারে পান তারেই বলেন, আমার নয়নতারা বড় হাবা ( উচ্চৈঃস্বরে ) মা ! ও মা ! ঘুমেয়েছিল নাকি ? আমি এক একা বসে থাকতে পারিনে, আমার ভয় করে । নেপথ্যে—এদিকে আয় না ? দেখ না কে যেন ডাকছে ! নয়ন—আমি যেতে পারিনে। যে ডাকে সে কি পথ চেনে না ? দ্বিতীয়বার নেপথো-তোর আর নবাবি দেখে বাচিনে। সে পথ চিন্তুক আর না চিচুক, আমি ডাকছি তুই উঠতে পাললিনে ? নয়ন —কোন বেটা নবাবপুত্র এসেছে যে এগিয়ে না আনলে আর আসতে পারেন না। আমি যেন ঘরের মাগ হয়ে পড়েছি । { জোরে পদনিক্ষেপ করিতে করিতে গমন ] নেপথ্যে--পথ ভুলেছেন নাকি ? মাপ করবেন । [ নগেন্দ্রবাবুর পরিধেয় ধরিয়া নয়নতারার পুনঃপ্রবেশ ] লয়ন –রঙ্গরসভরা এই তারারঙ্গভূমি। মন খুলে বোসে দুশ মজা কর তুমি ।