পাতা:মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্রহ প্রথম খণ্ড.djvu/১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রত্নবর্তী ○ জলপ্রাপ্ত হইলেন না। একে মাৰ্ত্ত গুর প্রচগু কিরণ, তাহাতে আবীর অনেক ক্ষণ পৰ্য্যস্ত বনে বনে ভ্রমণ করাতে ক্লান্ত হইয়া পড়িলেন এবং মৃত্যু নিকটবৰ্ত্তী জানিয়া খেদ করিয়া বলিতে লাগিলেন, হা পরমেশ্বর ! আমি আপন দোষে আপনি বিপদে পড়িয়ছি, ঘোরতর পিপাসা আমার জীবন-নাশিনী হইয়াছে, আর সহ হয় না। এই তৃষ্ণাৰ্ত্ত নরাধম সস্তানের প্রতি কৃপাদৃষ্টিপাত করিয়া কিঞ্চিৎ জীবনদানে জীবন রক্ষা করুন । রাজপুত্র এবশ্বকার আক্ষেপ করিয়া পুনরায় জলান্বেষণে প্রবৃত্ত হইলেন। কিয়দ্ধর অতি কষ্টে গমন করিয়া হঠাৎ এক মনোহর উদ্যানমধ্যস্থিত একটি স্বরম্য সরোবর দৃষ্ট হইলে রাজকুমার ত্রস্তভাবে তাহার তটবত্তী হইলেন। রাজপুত্রের পিপাসা ক্রমে ক্রমে তিরোহিত হইতে লাগিল । এই সময়ে তিনি অব এক আশ্চৰ্য্য ঘটনা অবলোকন করিয়া বিস্ময়াপন্ন হইলেন । সেই জলাশয়ের সেপোনপশ্বে একটি কপিবর তপস্বী বেশে করে অক্ষমাল ধারণ করিয়া নয়ন মুদিয়া জগদীশ্বরের ধ্যান করিতেছিল। যুবরাজ বঙ্কিম চক্ষে তাহাকে দর্শন করিতে করিতে সরোবরে অবরোহণ পূর্বক হস্তপদাদি প্রক্ষালন করিতে লাগিলেন। হঠাৎ তাহার পদভ্ৰষ্ট একবিন্দু বারি কপিবেশধারী তপস্বীর গায়ে পতিত হইবামাত্র কপিদেহ পরিবর্তন হইয় তাহার মকুন্তদেহ হইল । তখন তিনি অতি ভয়াবহ গভীর শব্দে কহিতে লাগিলেন, ওরে নরাধম পাপিষ্ঠ, কে তুই ? তুষ্ট কি জন্য আমার সমাধি ভঙ্গ করিলি ? কিঞ্চিৎ অপেক্ষা কর, প্রতিফল প্রদান করিতেছি। রাজনন্দন সুকুমার তাহার তর্জন কম্পিতকলেবর হইয়া কহিলেন, হে তাপস:শ্রষ্ঠ ! আমার আস্থাতসারে বারিবিন্দু আপনার গাত্রে পতিত হইয়াছে। অতএব রূপ। করিয়া আমার এই অজ্ঞানকৃত অপরাধ ক্ষমা করুন। আমি বহু কষ্ট সহ করিয়া ভবদীয় শ্রীচরণ দর্শন করিতে আসিয়াছি । রাজতনয়ের এবস্তৃত সকতের স্তুতিবাক্যে তপস্বী ক্ৰোধ সম্বরণ করিয়া কহিলেন, তুমি কোন বংশে জন্মগ্রহণ করিয়াছ ? এবং কি নিমিত্ত এই তরুণ বয়সে বনপৰ্য্যটনযন্ত্রণ সহ করিতে বাধ্য হইয়াছ ? সবিশেষ সমস্ত বর্ণন কর, শুনিতে একান্ত ইচ্ছ। হইতেছে। রাজনন্দন আত্মবিবরণ আদ্যোপাস্ত বর্ণন করিলেন । উদাসীন হাস্ত করিয়া কিয়ৎক্ষণ মৌনাবলম্বন করিয়া রছিলেন। হকুমার কৃতাঞ্জলিপুটে দণ্ডায়মান হইয়। বিবিধ প্রকার স্তব করিতে লাগিলেন। তপস্বী যোগবলে তাহার মনোগত ভাব অবগত হইয় আপন করস্থিত অঙ্গুরীয়ুক তাহাকে প্রদান করিলেন। কহিলেন, বংস, এই অঙ্গুরীট গ্রহণ কর। ইহার নিকট তুমি যখন যাহা চাহিবে, উংক্ষণাৎ