পাতা:মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্রহ প্রথম খণ্ড.djvu/১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্ৰহ তাহা প্রাপ্ত হইবে। কিন্তু তুমি এই অরণ্যনিীর উত্তর, দক্ষিণ ও পুর্ব প্রদেশ পরিভ্রমণ করিও, পশ্চিম প্রদেশে কদািচ গমন করিও না। তাহা হইলে বিপ৮ ঘটবে। সুকুমার অঙ্গুরী প্রাপ্ত হইয়া তপস্বীর পদচুম্বন পূৰ্ব্বক পুনরায় স্তব করিলেন। তপস্বী তাহাকে বিদায় করিয়া পূৰ্ব্ববৎ বানরাকৃতি হইয়া আপন ইষ্ট দেবতাতে মনোনিবেশ করিলেন । রাজনন্দন আপন উদ্দেশ্য সাধনে তৎপর হইলেন । পূৰ্ব্ব, দক্ষিণ, উত্তর এই তিনদিক ভ্রমণ করিয়া রাজকুমার চিন্তা করিলেন, যোগী পশ্চিমে যাইতে নিষেধ করিয়াছেন । কি জন্য নিষেধ করিলেন ? পরে এই স্থির সিদ্ধান্ত হইল পশ্চিম দিকে কোন আশ্চর্য্য পদার্থ থাকিতে পারে, অতএব তাহা অবলোকন করা কৰ্ত্তব্য । আমার বিপদ হইবার সম্ভাবনা কি আছে ? তপস্বী-দত্ত অঙ্গুরীয়কের নিকট যাহা প্রার্থনা করিব তাহাই পাইব । এক্ষণে পশ্চিম প্রদেশেই গমন করা বিধেয়। এই ভাবিয়া তিনি একাদিক্ৰমে পশ্চিমাভিমুখে গমন আরম্ভ করিলেন । এইরূপে বিংশ দিবস নানা বন উপবন ও পৰ্ব্বতশ্রেণী উত্তীর্ণ হইয়া পবিশেষে একটি অপূৰ্ব্ব নগরে প্রবেশ করিলেন। তত্ৰত অভিনব বস্তু, মানবম গুলী ও নগরের শোভা দর্শন করিতে করিতে ক্রমে ক্রমে অগ্রসর হইতে লাগিলেন, দেখিলেন, সম্মুখেই রাজবাটীর প্রবেশদ্বারে একখ গু কৃষ্ণবর্ণ প্রস্তরফলকে স্বর্ণীক্ষরে এই লিখিত আছে, “এই রত্নপুর সাম্রাজ্যেশ্বরের দুহিতা প্রতিজ্ঞ করিয়াছেন, ফে ব্যক্তি সপ্তাহকাল তাহার মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করিতে পারিবেন, তিনি তাহাকেই পতিত্বে বরণ করিবেন । যিনি উক্ত সাতদিন অভিলষিত দ্রব্য প্রদান করিতে পরায়ুখ হইবেন, তাহাকে যাবজ্জীবন কারাবাসে থাকিতে হইবে।” নৃপনন্দন উক্ত বিজ্ঞাপনী পাঠ করিয়া এবং অন্য অন্য লোকের নিকট রাজদুহিতার রূপলাবণ্যের কথা শ্রবণ করিয়া একেবারে অধীর হইয়া পড়িলেন, এবং মনে মনে চিন্তা করিতে লাগিলেন, কপিরূপী তপস্বী-দত্ত যে অমূল্যরত্ন আমার নিকটে আছে, তাহার সহায়তায় রাজকুমারীর অভীষ্ট সমুদায় অবলীলাক্রমে প্রদান করিতে পারিব, অতএব রাজদুহিতার পাণিপীড়নে যে আমি সমর্থ হইব, তাহার কোন সন্দেহ নাই। এইরূপ কল্পনাপথবর্তী হইয়া সাহস ও উৎসাহ সহকারে পাশ্ববৰ্ত্তী ডঙ্কাধনি করিলেন । তৎক্ষণাং কতিপয় পরম স্বন্দর যুব পুরুষ আসিয়া রাজনদের হস্তধারণ