পাতা:মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্রহ প্রথম খণ্ড.djvu/১৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

)* মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্ৰহ প্যারীসুন্দরীব গুপ্তচর সন্ধান করিয়া সুন্দরপুরে যে সংবাদ দিয়াছে, তাহা ঠিক হয় নাই। কারণ কুঠির লোকেই কেনীর সংবাদ ঠিক জানে না। • অনেকেই জানে, সাহেব কুঠিতেই আছেন। কেনী কুঠি হইতে বাহির হইলেন, মেমসাহেব পিয়ানোয় হাত দিয়া অনেক বাত্রি পর্য্যন্ত পিয়ানোর সুবে সুর মিলাইয়া গান করি লেন। ক্লাস্তবোধেই হউক, কি নিশির স্তব্ধতায বিশেষ কোন কথা মনে উঠিয়াই হউক, হৃদয় বিচলিত হইয়া মিহিমুর বন্ধ হইল। পিয়োনোর বাজনাও থামিয়া গেল । হৃদয়ে যে চিন্তাব লহরীই খেলিতে থাকুক, তাহ মুখে ফুটিল না। মনের কোন কথা মুখে আনিলেন না, কিন্তু ভাবে বোধ হইল যেন তিনি কি ভাবিতেছেন । তাহার পূর্ব অবস্থাব কথা—ইংল েগুব কথা ? তাহার ভাগ্যের কথা ? ভাবিতেছিলেন কেনীকে বিবাহ করিয়া ভালই কবিয়াছেন । ইংলণ্ডে থাকিলে এত সুখ ভাগ্যে কখনই ঘটিত না । নৃত্য, গীত, অহাব, বিহাব, আমোদ, বাজপ্রাসাদে রাজভোগ, ইহা কখনই তাহাব স্তন্দব ললাটে জুটিত না হয় জুতা সেলায়ের সুতাব যোগাড, না-হয় কাপড ইস্তিবিব সবঞ্জাম দুবস্ত, নয় দোকান ঘবে বিকিকিনি, কি অন্য কোনরূপ ব্যবসা অবলম্বন কবিয়া শবীব খাটাইয়া জীবনযাত্র নির্বাহ করিতে হইত। ভারতে আসিয়াছেন, ভালই হইয়াছে । সুখের সীমা পর্য্যন্ত ( বোধহয় তাহার মতে) উপভোগ করিতেছেন । ঈশ্ববের ধন্যবাদ দিয়া যেন তিনি চেয়ার হইতে উঠিলেন । শযনকুঠরিতে গিয়া রাত্রিবাস মেলিযেম ( রেশমী ) কাপড পবিয়া পালঙ্কে শয়ন করিলেন । পাখা চলিতে লাগিল । বোধহয় ভাগ্যফল আলোচনা কবিতে করিতে ঘুমে মাতিয়া পড়িলেন । পাখিদের প্রভাতী গানেই প্রতিদিন তাহার নিদ্রাভঙ্গ হইত। নিশি-শেষে আজ নুতন প্রকাবেব শব্দ তাহার কর্ণে প্রবেশ কবিল। হো ! হে: ! মার ! মাব ! লাঠির ঠাকাঠক, লোকের গররা–এই নূতন প্রকাব শব্দে তাহার নিদ্রা ভাঙ্গিয় গেল। শয্যা হইতে চক্ষু মেলিয। দেখিলেন, প্রভাত হইয়াছে। প্রভাতবায়ু জানালার খডখড়ি দিয়ে ধীরে ধীরে আসিয়া তাহার রেশমী বসন-সহিত ক্রীড়া করিতেছে । দোলিত পাখাব ঝালব মৃদু মুদু নডিতেছে। মিসেস কেনী এইসকল ভাব, আধ-নিমীলিত ষ্ট্ৰাখিতে, আধ আধ ভাবে দেখিয়া প্রাভাতিক সমীরের স্বাভাবিক মোহমন্ত্রে আবার নিদ্রায় অভিভূত হইলেন । কিন্তু নিদ্রার আবেশ বেশিক্ষণ রহিল না । ভীষণ রবে, লাঠিয়ালগণের হুহুংকার এবং মার মার শব্দে ঘুম ভাঙ্গিয়া গেল। প্রাণ দুর দুর করিয়৷ কঁাপিতে লাগিল। একি কাগু ? কি