পাতা:মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্রহ প্রথম খণ্ড.djvu/১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রত্ববতী 업 করি। রাজনন্দন এই বাক্য শ্রবণ করিবামাত্র তৎক্ষণাৎ রাজনির্দিষ্ট স্বীয় বাসস্থানে প্রত্যাগত হইয়া দ্বার রুদ্ধ করিলেন এবং করস্থিত অঙ্গুৰীয়ককে সম্বোধন করিয়া বলিলেন, অঙ্গুরীয়ক ! রাজকন্যার অভিলষিত মূদ্র প্রদানে আমাকে রুতার্থ কর । নিমেষকালমধ্যে মুদ্র উপস্থিত হইল। তখন নুপনন্দন বিংশতি সহস্ৰ স্বর্ণমূদ্র গণনা করিয়া রাজনন্দিনীর সহচরীর করে অর্পণ করিলেন। রাজা এই আশ্চর্য ব্যাপার দেখিয়া বিস্মযোৎফুল্ল বদনে যুবরাজের অনেক প্রশংসা করিতে লাগিলেন এবং ভাবিলেন, এই ব্যক্তি বাজকন্যার সম্পূর্ণ বাঞ্ছা পূর্ণ করিয়া নিঃসন্দেহ পাণি গ্রহণ করিবেন । দ্বিতীয় দিবস বাজা পূৰ্ব্বাপেক্ষা অধিক সম্মান সহকারে রাজপুত্রকে ভোজনাদি করাইয় তাহার ভ্রমণবৃত্তাস্ত অবগত হইতে লাগিলেন, কিন্তু রাজকুমারী অদ্য আবার কি প্রার্থনা করেন, এই চিন্তায় রাজকুমারেব অস্তঃকরণ ব্যাকুল হইতে লাগিল। অক্ষুবীয়কের অলৌকিক গুণ স্মরণ হওয়াতে পুনৰ্ব্বার মনোসংযোগপূর্বক ভ্রমণবৃত্তান্ত বর্ণন করিতে লাগিলেন। বজনীযোগে রাজকন্য। র্তাহাকে নিকটে আহবান করিয়া মধুর সম্বোধনে বলিলেন, যুবরাজ । কল্য আপনি এ দাসীর অভিলষিত অর্থপ্রদানে চরিতার্থকরিযাছেন, অদ্য অনুগ্রহ প্রকাশ করিয়া বিংশতি সহস্র রৌপ্যমুদ্র প্রদান করুন। রাজপুত্র শ্রবণমাত্র পূর্ববৎ উপায়াবলম্বন করিয়া বিংশতি সহস্র রৌপমুদ্র তৎক্ষণাৎ প্রদান করিলেন। এই রূপে চতুর্থ দিবস তাহার বাঞ্ছা পূর্ণ করিয়া নৃপনন্দনের অন্ত:করণে কৃতকার্যোব আশ ক্রমেই বলবতী হইতে লাগিল । রাজনন্দিনী কি কৌশলে রাজপুত্রকে প্রতিজ্ঞাজালে বদ্ধ করিবেন, একান্তমনে সেই উপায় উদ্ভাবন করিতে লাগিলেন ; সখীকে কহিলেন, সহচবি ! আর তিন দিবস প্রতিজ্ঞা পূর্ণ করিলেই আমার গর্ব সম্পূর্ণরূপে খৰ্ব্ব হইবে, সুতরাং বিবাহ করিয়া রাজনন্দন যে, আমার অহঙ্কার চূৰ্ণ করিতে সৰ্ব্বাগ্রে সযত্ব হইবেন, তাহ বলা বাহুল্য । অতএব যাহাতে মান বৃক্ষ হয়, এরূপ উপায় কর । এই আগন্তুক যুবাপুরুষদের সহিত কোনরূপ অর্থ থাক দূরে থাকুক, দ্বিতীয় পরিধেয় বস্তুও নাই । অতএব ইনি কোথা হইতে আমার অভিলষিত অর্থ সংগ্রহ করেন, তাহার অনুসন্ধান করা অত্যাবগুক । বোধহয়, ইহার নিকট কোনরূপ দুল্লভ বস্তু আছে, তাহার নিকট বাহা প্রার্থনা করেন, তৎক্ষণাৎ তাহাই প্রাপ্ত হন। রাজকঙ্কার চতুরা সহচরী এই বাক্য শ্রবণে ।