পাতা:মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্রহ প্রথম খণ্ড.djvu/১৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উদাসীন পথিকের মনের কথা Set কৌশলে কেনীর মাথা আমার নিকট আনিয়া দিবে, এই হাজার টাকার তোড়া আমি তাহার জন্য বাধিয়া রাখিলাম। এই আমার প্রতিজ্ঞা, আমার জমিদারি, বাড়ি, ঘর, নগদ টাকা, আসবাবপত্র যাহা আছে, সমুদায় কেনীর কল্যাণে রাখিলাম । ধৰ্ম্মসাক্ষী করিয়া বলিতেছি সুন্দরপুরের সমুদয় সম্পত্তি কেনীর জন্য রহিল। অত্যাচারের কথা কহিয়। মুষ্টিভিক্ষায় জীবনযাত্রা নিৰ্ব্বাহ করিব । স্বারে দ্বারে কেনীর অত্যাচাবের কথা কহিয়৷ বেডইৰ। যে ঈশ্বর জগতের মুখ দেখাইবার পূৰ্ব্বেই আহারের সংস্থান করিয়া মায়ের বুকে বাখিয়া দিয়াছেন, সেই ঈশ্বরের নাম করিয়া প্যারীসুন্দরী যাহাব দ্বারে দাড়াইবে, সেইখানেই সমাদরে স্থান পাইবে । দুরন্ত নীলকরের হস্ত হইতে প্রজাকে বক্ষা করিতে জীবন যায় সেও আমার পণ । আমি আমার জীবনের জন্য একটুকুও ভাবি না। দেশের দুর্দশা, নিরীহ প্রজার জুববস্থার কথা শুনিয়া আমার প্রাণ ফাটিয়! যাইতেছে । মোকদ্দমার জন্য তোমরা ভাবিও না। যতপ্রকারের তদবির হইতে পারে তাহা কব ।” রামলোচন বলিলেন, “আমার বোধ হইতেছে শীঘ্রই থানাদার দারোগা, জমাদার, আসামী ধরিবাব জন্য মফস্বলে গ্রামে গ্রামে আসিবে।” প্যারীসুন্দরী বলিলেন, তাহাতে ভয় কি ? যত টাকা লাগে দারোগাকে দেও, আর এই বলিয়! কৈফিয়ত দেওয়াইয়া দেও যে, আসামীর নামের কোন লোক আমার বাটিতে নাই, আমার সরকাবে নাই। সুন্দরপুরগ্রামে নাই। আমার এলাকার মধ্যে নাই । আমব কখনও সে নামের কথা শুনি নাই ৷ সাহসে কম হইবে না। রামানন্দবাবুব উপার্জিত ঐশ্বৰ্য্য, জমিদারি সকলি আজ কেনীর জন্য র্তাহারই কন্যা প্যারীসুন্দরী রাখিয়া দিল। আর র্তাহারাও পৈতৃক জমিদারি নহে । ইহাও ইংরেজের অনুগ্রহেই হইয়াছিল । তাহারাও ইংরেজ, কেনীও ইংরেজ, একপ্রাণী বটে—তবে মানুষ আর শূকর। এক ঝাড়ের বঁাশ—কেহ হাড়ীর বাট, কেহ পূজার ফুলের সাজি। কত ইংরেজ কত কার্য্যে এদেশে আসিতেছেন, কই কেনীর মত নর-রাক্ষস তো একটিও দেখি না। অনেককে দেবতা বলিয়া পূজা করিতে ইচ্ছা করে। কুমারখালির ইষ্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানীর রেশমের কুঠির কল্যাণেই পিতার এত ঐশ্বৰ্য্য, এত জমিদারি। ইংরেজ বাহাদুরের শুভদৃষ্টিতেই সুন্দরপুরের স্বরের স্বাক্ট বোধহয় কেনীর কল্যাণে সকলি মাটি হইবে। একেবারে সারা হইত্ত্বে! তোমরা আমার আদেশ মত কেহই কার্য করিতে পার না, ইহাই আমার মনের দুঃখ । একজন-দৌরাত্ম্যকারী ইংরেজকে জবা করিতে পারিলেন, তালরূপ