পাতা:মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্রহ প্রথম খণ্ড.djvu/১৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

3)stor মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্ৰহ বিনোদ বলিয়াছে, আমি জানি ঐ আলমারির নিকটে হাতৰাক্সটির মধ্যেই অছিয়তনামা আছে। আমি মীরসাহেবকে রাখিতে দেখিয়াছি। আমি অছিয়তনামা চিনি। বিনোদ মীরসাহেবের বিশ্বাসী, মীরসাহেবের অনেক গুপ্তকথা জানে, স্বতরাং অছিয়তনামার সন্ধানও যথার্থ। জামাইবাবু বিনোদকে একেবারে বড়লোক করিবেন—কোরান ছু ইয়া প্রতিজ্ঞা কবিয়াছেন । ইহার পরেও শতেক দেড়শত বিনোদের বাডি গিয়াছে। তাহার পরেও বিনোদের কত তোষামোদ, কত খাতির । বাক্সটি খুব সাবধানে রাখিয়া দিয়াছেন । সুযোগ পান নাই বলিয়া খুলিয়া দেখিতে পারেন নাই। একদিন খুলিবার জন্য চেষ্ট! করিয়াছিলেন, চাবি নাই । * অন্য অন্য চাবি দিয়াও দেখিয়াছেন, খোলে না। তালার কলটি পর্যন্ত ঘোরে না । ভাঙ্গিতেও সাহস হয়না । বাক্স ভাঙ্গার কথা প্রকাশ হইলে যদি ঐ বাক্সের তালাস হয়—ন পাওয়া গেলেই সন্দেহ হইবে যে, জামাইবাবুই এ কীৰ্ত্তি করিয়াছেন। বাক্স ভাঙ্গার কারণ কি ? রাত্রে বাক্স ভাঙ্গার আবশ্বক কি ? নানা ভাবনার পর স্থির করিয়াছেন যে হাতে পাইয়াছি কাজ উদ্ধার হইয়াছে। যে দিন সুবিধা আর সুযোগ পাইব, সেইদিন আবার খুলিবার চেষ্টা করিয়া দেখিব। নিতান্ত পক্ষে না খোলে তাঙ্গিব । দেখি কি হয়। কিছুদিন চাপিয়া যাই । এমন স্বন্দর বাক্সটি ভাঙ্গিতেও মনে কষ্ট হয়। ভাবি স্বার্থে অযথা ব্যাঘাত, ভয়, কলঙ্গ, অপবাদ, লজ্জা এই কয়েকটি বিষয় ভাবিয়া বাক্স খুলিবার কি ভাঙ্গিবার চেষ্টা আর করিলেন না । মনে মনে আরও স্থির করিলেন যে মূল দলিলত হাতে আসিল, এখন অন্ত অন্য দলিল হাতে করা চাই। সকলের সম্মুখে মীরসাহেব জামাইবাবুকে একদিন বলিলেন, চিরকাল শালঘর মধুয়ার কুঠির মালিক সঙ্গে বিবাদ বিসস্বাদ ছিল, ঈশ্বর ইচ্ছায় “কেনী” এখন অনুগ্রহই করেন। এদিকে বিষয়াদিতেও আর কোন গোলযোগ দেখি না। এই সময় আমি একবার সেরাজগঞ্জ হইয়া আসি। অনেকদিন যাইনা। একবার গিয়ে দেখিতে হয়। এ বাটির কাজ সকলি আপনি দেখিবেন । বাপু ! আমার আর কোন আশা নাই। সকলি তোমাদের, আমার আর কিছুই ভাল বোধ হয়না। তোমাদের কাজকৰ্ম্ম তোমরা দেখে শুনে কর। আমি নিশ্চিন্তভাবে বসে বসে ছুটে খেতে পেলেই হল। তোমাদের ঘর সংসার তোমরা দেখে শুনে রক্ষণ কর । ,