পাতা:মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্রহ প্রথম খণ্ড.djvu/১৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উদাসীন পথিকের মনের কথ{ । তাগড়া লাঠিয়ালের লাঠি ভজিতে ভাজিতে জলে নামিল-সেপাই সাহেবের কাপড কসিতে কসিতে ‘ডিঙ্গি লাও ডিঙ্গি লাও বলিয়া চেচাইতে চেচাইতে তাহারা নদী পার হইয়া কালীগঙ্গর পশ্চিমতীরে যাইয়া উঠিল। কেহ পলাইল না । পিঠ দেখাইয়া দৌড়িল না। সকলেই দাড়াইল এবং সাহেবকে বলিতে লগিল । হুজুর । আপনি রাজ–আপনি দেশের বাদশা । আমরা তাবেদার, চকব, গোলাম, নফর—দয়া করে আমাদিগকে মাপ করিবেন হুজুরের সহিত আমাদের কোন কথা নাই। — যোডঙ্গতে লাঠিযালগণ এইরূপ বলিতে লাগিল। মাজিষ্ট্রেট সাহেব এবং দারোগ জমাদার নদীপারের নৌকার উপর থাকিয়াই ঐ সেইকথা—সেই বুলি— নৌকা পশ্চিম তীরে লাগিল । মজিষ্ট্রেট সাহেব ঘোড়া সহিত পার হইয়াছেন। ঘোড়ায় উঠিয়াই দারোগী মাহাম্মদ বক্সকে বলিলেন—“কি কর তোমরা কর কি ? একজনকে ও ধরিতে পাবিলে না ?” লাঠিয়ালের ঐরূপ কাকুতি-মিনতি করিতে করিতে ক্রমে পিছে হটিতেছে । ইহবা ও অগ্রসব হইতেছেন । মাজিষ্ট্রেট সাহেব ঘোড উঠাইযা যাইতেই মাহাম্মদ বক্স দরোগ বলিল— “হুজুর । লাঠিয়াল গ্রেফতার করিতে আপনি যাইবেন না। আমবা উপস্থিত থাকিতে আগে হুজুরের যাওয়া ভাল দেখায় না। তবে যে বেটা দৌড় দিবে, তাহার পাছে পাছে ঘোড়া উঠাইবেন ।” মাজিষ্ট্রেট সাহেব মহাবিরক্ত হইয়া দারোগীকে গালাগালি দিয়া বলিলেন, এত বরকন্দাজ, এত চৌকিদার, কেনীব এত লোকজন থাকিতে উহাদের একগাছা সডকি, কি একখানা লাঠি ধরিতে পারিলে না ? লাঠিয়াল গ্রেফতার করা তোমার কাজ নহে । লাঠিয়ালদল হইতে একজন হাতযোড় করিয়া গলায় কাপড় বান্ধিয়া বলিতে লাগিল—“ধৰ্ম্মাবতীর ! আজি ফিরিয়া যাউন । দারোগ সাহেবকেও ফিরিয়া যাইতে আদেশ করুন। দোহাই ধৰ্শাবতার ! ফিরিয়া যাউন, একজনকেও ধরিতে পারিবেন না । আর আগে বাড়িবেন না । কেনীর কপালের ভারি জোর ! হুজুরের সাহায্যে আজ বাচিয়াছে হুজুর না থাকিলে এতক্ষণ তাহার মাথা সুন্দরপুর নিশ্চয়ই যাইত। ধর্শাবতার। ষোড়হন্তুে বলিতেছি আজ ফিরিয়া মাউন। ১২