পাতা:মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্রহ প্রথম খণ্ড.djvu/১৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্ৰহ. "שר צ আমরা বড়ই কষ্ট পাইতেছি। দারোগাসহ আজিকার মত ফিরিয়া বাড়ুন আমরাও ফিরিয়া বাইতেছি । সাহেব শুনিলেন না । বেশীর ভাগ, ড্যাম, শুয়ার, ডাকু ইত্যাদি বলিয়ঃ গালাগালি দিলেন এবং মাহাম্মদ বক্সকেও যাহা বলিবার তাহ বলিলেন । জমাদার বরকন্যাজ কেহই বাকি রহিল না। মাহাম্মদ বক্স নিরুপায় হইয়া ত্রস্তপদে অগ্রসর হইতে লাগিলেন । জমাদার, বরকন্দাজ, চৌকিদারগণও ‘ধর ধর’ রব করিতে করিতে দারোগা সাহেবের পশ্চাৎ পশ্চাৎ ছুটিল—সাহেবও ত্রস্তপদে ঘোড়া চালাইলেন । প্যারীসুন্দরীর লাঠিয়াল পুনরায় বলিতে লাগিল, “ধর্শাবতার : আপনি রাজা আমরা প্রজা, আমাদিগকে নষ্ট কবিবেন না । আজ ছাডিয়া দিন । যোড হাতে গলায় কাপড় লইয়া বলিতেছি, আজ ফিরিয়া যাউন। আর আমাদিগেব সঙ্গে সঙ্গে আসিবেন না । কিছুতেই আমাদিগকে ধরিতে পরিবেন না। আপনি সমস্ত দিন এ-প্রকারে সঙ্গে সঙ্গে আসিলেও ধরিতে পরিবেন না । মাজিষ্ট্রেট সাহেব সে কথায় কর্ণপাতও করিলেন না। আর একটু ত্রস্তে যাইয়া একেবারে লাঠিয়ালদিগকে ধরিবার উপক্রম করিলেন । লাঠিয়ালগণ মধ্য হইতে উচ্চৈস্বরে ডাক ভাঙ্গিয়া তখনি আনি বান্ধিয়া দাড়াইয়া বলিতে লাগিল। ‘ভাই সকল ! আর দেখ কি ? বাচিবার আশা তো নাই। হাতে অস্ত্র থাকিতে রাখালের হাতে ধরা পড়িব, বডই দুঃখের কথা ! সাহেব কিছুতেই যখন শুনিতেছেন না, আমাদেব কথা মানিতেছেন না। এত মিনতি, এত কাকুতি করিয়া বলিলাম, কিছুতেই যখন তাহার মত ফিরিল না, তখন স্ত্রীলোকের ন্যায় কান্দাকাটি করিয়া মরি কেন ? ধর দারোগী ! ধর জমাদার বরকন্দাজ—নে মাথা, নে ঐ বেটার মাথা—একে একে দেখাইয়া দেই। আয় আমাদিগকে ধরিয়া নিয়ে যা । দেখি তোদের বুকের পাট-দেখি তোদের বুকের সাহস । আয় বেটা ! কেনীর গোলাম । হারামখোর আয় ! ধর দেখি কাকে ধরিবি । আয় !” মাজিষ্ট্রেট সাহেব ক্রোধে অধীর হইয়া মাহাম্মদ বক্সকে পুনঃ পুন: ৰলিতে লাগিলেন। “পাকড়ে পাকড়ে, পাকড়ে ডাকু লোককে পাকড়ে।” । মাহাম্মদ বক্স সাহেবের আজ্ঞায় একটু অগ্রসর হইলেই মাজিষ্ট্রেট সাহেব