পাতা:মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্রহ প্রথম খণ্ড.djvu/১৮৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উদাসীন পথিকের মনের কথা › ግ> দেখিলেন যে, একজন লাঠিয়াল ঢাল মাথায় করিয়া "ঞ্চি ঋি’ শব্দ করিতে করিতে আসিয়া মাহাম্মদ বক্সের বক্ষে সডকি মারিয়া পিঠ পার করিয়া দিল । পলক ফেলিতে ফেলিতে আট গাছি সডকি মাহাম্মদ বক্সের বুক, পেট পার হইয়া রক্ত মুখে বাহির হইল। অন্ত দিকে আর একটি বরকন্দাজের মাথা লাঠির আঘাতে ফাটিয়া গেল । সাহেব সকলেব পাছে, কিন্তু চক্ষু সকলেব অগ্রে-চারিদিকে ঘুরিতেছে। নজর পড়িল—তিন, চারগাছা সড়কি তাহার মস্তক, বক্ষ লক্ষ্য করিয়া উঠিতেছে। সাহেব, মাহাম্মদ বক্সের অবস্থা দেখিয়াই একপ্রকার চৈতন্য হারাইয়াছেন । কোনদিকে কোন পথে যাইবেন, পথ খুজিয়া পাইতেছেন না । লাঠিয়ালের হস্তে and বইবে সেই ভাবনাই অধিক। সম্মুখে আর একজন বরকন্দাজ পড়িয়! গেল। সাহেব অশ্বকে সজোরে কশাঘাত করিয়া চম্পট দিলেন না—প্রস্থানও করিলেন না বুণে ভঙ্গ দিয়া পালাইলেন না । আত্মরক্ষা করিলেন। চক্ষের পলকে বভাগের আগে আগে উড়িয়া বহুদূর আসিয়া পড়িলেন । জমাদার, বরকন্দাজ এবং চৌকিদারের লাঠিয়ালদিগের হাতে পায়ে ধরিয়া তাহারাও আত্মরক্ষা করিল। কিন্তু মাহাম্মদ বক্সের মৃতদেহ লাঠিয়ালেরা ফেলিয়া গেল না। প্রায় পঞ্চাশ গাছ৷ সড়কির আগায় গাথিয়া ডাক ভাঙ্গিতে ভাঙ্গিতে ‘মার মার’ শব্দে চলিয়া গেল। হেন হইতে আসিয়াছিল সেইখানে চলিয়া গেল। দারোগার লাস লইয়া চলিয়া গেল । _ মাহাম্মদ বক্সের মৃতদেহ প্যারীসুন্দরীর ভারলের কাছারিতে লইয়া গেলে, কবীকারক মহাশয় ভীত হইলেন না । সাহসের উপর নির্ভর করিয়া কৰ্ত্তব্যকার্য্যে প্রবৃত্ত হইলেন। কিন্তু মুখে বলিলেন— সৰ্ব্বনাশ দারোগাখুন ! বড় ভয়ানক কথা ।” লাঠিয়ালেরা বলিল, “দারোগাখুন সহজ কথা ! যে বিপাকে পড়িয়াছিলাম যে ক্ষাদে আমাদিগকে আজ আপনি ফেলিয়াছেন, আর একটু থাকিলে মাজিষ্ট্রেট সাহেবকেই এই অবস্থায় দেখিতে পাইতেন । কি করি প্রাণের দায় মহাদায়! যাহা হইবার হইয়ছে, এখন যাহাতে আমরা বাচি তাহার উপায় করুন। মাজিষ্ট্রেটকেও তাড়াইয়াছি। দারোগার দশা সাহেব স্বচক্ষেই দেখিয়াছেন। বাচিবার আশা যে আর নাই তাহা বুঝিয়াই আপাততঃ রক্ষার এক উপায় করিয়া আসিয়াছি মাত্র। । জামরা বিদায় হইলাম। আর আমাদের দেখা পাইবেন না। এখন আপনাদের বৃক্ষার পথ আপনার দেখুন। . আমরা বিদায়। যদি প্রাণে বাচি হজুরে হাজির