পাতা:মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্রহ প্রথম খণ্ড.djvu/১৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উদাসীন পথিকের মনের কথা 〉pぐ হয় তাহ জানি না । এই হোমই যে, স্বৰ্গসুখ ভোগ করা যায়, তাহাও স্বীকার করি না। এই ঝাড়, জঙ্গল, জলে ডোবা, সেঁতসেঁতে, কুডেম্বর শোভিত হোমই যে, পবিত্র স্বৰ্গ হইতে গরিয়সী, তাহাই বা কয়জনে মনে করি। সামান্ত কাঁট, পতঙ্গ, পশু, পক্ষী, প্রভৃতিরও “হোম” মায়া আছে ; হোমেব প্রতি যত্ব আছে, আদরও আছে। বিলাতী হৃদয়ে থাকিবারই তে কথা। আমরা নিমকহাবাম, আমরা কৃতঘ্ন, তাহাতেই এই দশা। আমরা বাঙ্গালী প্রাযই মা বাপের মর্য্যাদা বুঝি না । স্বপুত্র বলিয়াই হোমের কুচ্ছ, হোমের মানি, হোমটা একটা “নেষ্ট প্লেস, বাঙ্গলাদেশ পায়খানার সামিল’ অধঃপাতে যাক —আমরা স্বাধীন । ধৰ্ম্ম, কৰ্ম্ম, সমাজ যথেচ্ছারূপ ব্যবহার কবিতে পারি, অমিবা স্বাধীন। আমাদের মন স্বাধীন । হোমের আবার নির্দিষ্ট কি ? জগৎময হোম । সমূদয জগৎ আমাদের হোম । কনষ্টাটিনোপল কি আমাদের নহে? সেন্টপিটাস বর্গ কি আমাদের হোম নহে ? হোম কি আমাদের হোম নহে? যে দেশ, যে স্থান ভাল সেই আমাদেব হোম । এ তো লাক কথার এক কথা, একথfব উত্তর নাই ! আমি উদাসীন পথিক । মনের কথা বলিতেছি । —এ জগতে আমাব কেহই নাই, সেকথা আগেই বলিষাছি। ধরিবার লক্ষ্য নাই, পা বাখিবাব স্থান নাই । ইহার পবেও সময় সময় অনেকের নিকট পাগল সাব্যস্ত হইতে হয । এ অবস্থাতে ৪ পাঠক ! হোমেব জন্য পথিকের প্রাণ র্কাদে । অনেক বাজে কথা বলা হইল। মিসেস কেনী হোমের নামেই গলিয়া পড়িলেন। তবে এখানেও অনেক সুখ, সেখানেও অনেক সুখ । বেশীর ভাগ জন্মভূমি। হোমের আলাপেই মিসেস কেনী গলিয়া পডিলেন। প্রাণ খুলিয়া স্বামী মুখ চুম্বন করিলেন। বিশেষ আদরের প্রতিদানও পাইলেন। বিলাত যাওয়া স্থির হইল। মিসেস কেনীর বিলাত যাত্রার কথা পাক হইয়া দাডাইল । প্রভাতে সকলেই শুনিল মেমসাহেব বিলাত যাইতেছেন । বজরার দাড়ি, মাঝি, সাজ-সরঞ্জামসকল সংগ্ৰহ হইল। পাড়ে, দোলে, চোবে, সিং, চার জওয়ান নৌক রক্ষক হইয়া চলিল। মিসেস কেনী বেলা বার টার সময় কলিকাতা যাত্রী করিলেন । কলিকাতা যাইয়া বজরা বিদায় দিবেন জাহাজে চাপিবেন । মেমসাহেব বিলাত যাত্রা করিলেন টি. আই. কেনী তিন দিবস শয়নগৃহহইতে বাহিত্বে আসিলেন না । কোন কাজকৰ্ম্মও দেখিলেন না।