পাতা:মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্রহ প্রথম খণ্ড.djvu/১৯৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্ৰহ פרלט. মামলা-মোকদ্দমার কথাও কিছু শুনিলেন না। সন্ধান নিলেই জানা যায় যে, সাহেব “শোয়ার কামরায়।” কার্যাকারকগণ অনেক তর্ক-বিতর্কের পর সাব্যস্ত করিলেন, মেমসাহেব বিলাত গিয়াছেন, তাহাতেই সাহেবের মন ভাল নাই।– কাজকামের দিকে তত মন নাই। সাহেবের মন ভালই থাক আর যাহাই থাক, তিনদিন তিন-রাত্রের পর কেনী সাংসারিক কার্য্যে মন দিলেন । কুঠিব লোকে দেখিল সাহেব নীচে নামিয়া ফুলবাগানদিক যাইয়া পায়চারি করিয়া বেড়াইতেছেন। “পাইপ’ চলিতেছে। কেনী শুধু পায়চারি করিতেছেন না। মনের কথা মনেই তুলিতেছেন, মনেই আলোচনা, মনে মনেই মীমাংসা করিতেছেন । প্যারীসুন্দবার সহিত মোকদ্দমা চলিল। মোকদ্দমার ফলাফল দেখিয়া পরে অন্য কথা। পাংশার ভৈরববাবু, নলডাঙ্গার রাজা, নড়ালের রতন রায়, এই তিনটিই এখন দেখিতেছি । কিন্তু ইহাদের সহিত লাঠালাঠি, মারামারি নাই । আইন-আদালতের মাব পেচে আমাকে জব্দ করিবেন, তারই যোগাড় হইয়াছে। চলুক—কিন্তু মারামারি, লাঠালাঠি না হইলে মনের ফুৰ্ত্তি হয় না । আমি প্রস্তুত, কিন্তু তাহাবা কেহই ওপথে যাইতে চাহে না ! ভৈরববাবু ভাবী চতুর । কিছুতেই দাঙ্গা-হাঙ্গামায় ভেড়ে না। বাবুকে বশে আনার জন্য এত চেষ্টা করিলাম, কিছুতেই কিছু হইল না। নিকটে নয় কি করি । আচ্ছা এবারে একতাত বাবুর সহিত খেলাইতে হইবে। কেনী পায়চারী করিতেছেন। একবার দক্ষিণমুখী হইতেছেন, আবার ফিরিয়া উত্তরদিকে যাইতেছেন। একবার দেখিলেন, হরনাথ কতকগুলি কাগজপত্র হস্তে করিয়া বাগানের প্রবেশদ্বারে দাড়াইয়া আছে। সাহেবের নজর পড়িতেই হবনাথ প্রায় মাটি পর্য্যস্ত মাথা নোওয়াইয়া সেলাম বাজাইলেন । কেনী ইঙ্গিতে হরনাথকে ডাকিলেন । হরনাথ বাগানের মধ্যে আসিয়া পুনরায় দস্তুরমত সেলাম বাজাইয়া খাড়া হইলেন । কথা চলিল— মোকদ্দমার কথা—খুনী মোকদ্দমার কথা, লুটের মোকদ্দমার কথা, রাজার কথা, নড়াইলের কথা, নানা কথা চলিতে লাগিল । হরনাথ সাহেবের পিছে পিছে হটিতে লাগিলেন । তাহার হাওয়া খাওয়—ইহার প্রাণে ময়া পাঠক ! আমরা নিজীব বাঙ্গালী, হাওয়া খাইতে ভালবাসি না। ঘরে বসিয়া । কেবল