পাতা:মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্রহ প্রথম খণ্ড.djvu/১৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উদাসীন পথিকের মনের কখা 〉労・。 অনেকেই কঁাপিতে লাগিলেন। এখন যা করে জকি —আমীন, তাগাদগীরি, খালাস পাইক, বরকন্দাজ, প্যাদা, বাবুরচি, খানসামা, খেদমতগার জকির জালায় অস্থির হইয়া পড়িল ৷ জকি অনেক সময় প্রধান প্রধান কাৰ্য্যকারকদিগের প্রতিও হুকুম চালাইত। তাহারা মান-সন্ত্রম বজায় রাখিতে বাধা হইয়া জকির হুকুম তামিল করিতেন । দিন দিন জকিব অবস্থা পরিবর্তন হইতে লাগিল । বাটিতে বড় বড় ঘর উঠিল। বাশের খুঁটি উঠিয়া শাল কাঠের খুঁটি হইল। ভাল ভাল গরু ও ভেড়াতে গোশালা পরিপূর্ণ হইল। প্রতিবেশীর শেষে গ্রামস্থ লোকেরা সকলেই জকিকে ভালবাসিতে লাগিল। সদাসৰ্ব্বদা জকিব বাটিতে লোকের গতিবিধি, আমোদআহলাদ, লেন দেন, কথাবার্তা, পবামর্শ চলিতে লাগিল । যে জকি এক কাঠা ধানের জন্য মহাজন বাড়িতে ছালা পাতিয়াছে । আজ মনিবের ভালবাসায়, গোলtভরা ধান, বাক্স ভবা টাকা । কত লোককে ধান কর্জ দেয়, টাকা কর্জ দেয় । জকি এখন মহাজন । ইচ্ছাধীন চাকুবী । পরিবার মধ্যে এক স্ত্রী । যে কারণেই হউক জকি আবার বিবাহ কবিতে ইচ্ছা করিল। জকির ময়না বেশ কথা কয় । মল্লিষের মত কথা কয়—কান পাতিয়া কথা শুনে। কথার উত্তর করে। এ বিবাহের কথা শুনিয়া কিছুক্ত বলিল না। জকিব বিবাহেব সম্পূর্ণ ব্যয় সাহেব দিলেন। সাহেবই ভালবাসিয়া আবার বিবাহ দিতেছেন, কুঠির লোকে এই বলিতে লাগিল। এক বলিতে দশজনে রাজি হইল। সতীনের ঘর বলিয়া কেহই কোন আপত্তি করিল না । সপ্তাহ মধ্যে বাজি বাজনায়, জকির বিবাহ হইয়া গেল । বিবাহের খাওয়া দাওয়া বিদায়, ইত্যাদি .গোলযোগ মিটিয়া গেল । একদিন টি. আই. কেনী জকিকে ডাকিয়া বলিয়া দিলেন, যে আজ হইতে তোমার অন্য কাজ আর কিছুই করিতে হইবে না। কেবল আমার হাতি, ঘোড়া, গরু ইত্যাদির তদারক করিবে. আর ইহাদের দানার বন্দোবস্ত তোমার হাতে থাকিবে । সুবিধা মত প্রতিদিন কোন সময়ে একবার কুঠিতে আসিয়া হিসাবমত দানা বাহির করিয়া মাহত ও সইসের জেম্বা করিয়া দিয়া যাইবে । আর কোন কাৰ্য্য করিতে হইবে না । সেই হইতে জকি দুই এক দিম পর কি সপ্তাহে একদিন কুঠিতে যাইয়া দানা বাহির করিয়া দিয়া আসিত। আর কোন সময় কুঠিতে ধাইত কি না তাহ কেহ বলিতে পারে না। একদিন জকি