পাতা:মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্রহ প্রথম খণ্ড.djvu/২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বুতুবতী Σ Σ . বলিলেন, রাজপুত্র অনেকক্ষণ গমন করিয়াছেন, এ পর্য্যস্ত প্রত্যাগত হইলেন না, তিনি অরুতকার্য্য হইয়াছেন সন্দেহ নাই । রজনীপ্রভাতে র্তাহাকে কারাগারে" প্রেরণ করা আবশুক । সুকুমার সমস্ত রজনী চিন্ত! শয্যায় শয়ন করিয়া অতিবাহিত করিলেন । র্তাহার স্বকুমার মুখচ্ছবি লাবণ্যহীন হইল। নিশাপতি র্তাহারই বদনপ্রতিমা ধারণ করিয়াই যেন মনোদুঃখে লুক্কায়িত হইলেন। রাজপুত্র রাজপুত্রীর প্রতিজ্ঞা পূর্ণ করিতে অসমর্থ হইয়াছেন, পাখীরা যেন সেই কথা বলিয়াই কলরব করিয়া উঠিল । স্বকুমার এতক্ষণ অন্ধকারে লজ্জাতাপিত কলেবর আচ্ছন্ন করিয়া রাখিয়াছিলেন, স্বৰ্য্যদেব কিরণজাল বিস্তারপূর্বক তাহ স্পষ্ট করিয়া দেখাইতে লাগিলেন । রাজপুত্রের মুখচন্দ্ৰম ক্রমেই মলিন হইতে লাগিল । রাজতনয় রজনীপ্রভাতে সহচরীদিগকে বলিলেন, কারাধ্যক্ষকে সংবাদ দাও, রাজপুত্র আমার প্রার্থনা পূর্ণ করিতে পারেন নাই, অতএব তিনি তাহার কৰ্ত্তব্যকৰ্ম্ম সমাধা করুন। সহচরী নৃপকুমারীর আদেশাতুসারে কারাধ্যক্ষকে সংবাদ দিল। কারাধ্যক্ষও মুকুমারের নিকট উপস্থিত হইয়া প্রতিজ্ঞানুসারে উহাকে কারাগারে আবদ্ধ করিলেন। নৃপতি সেই বাক্য শ্রবণে যৎপরোনাস্তি দুঃখিত হইয়া বলিলেন, আমার দুহিতার মনোমত পাত্র পৃথিবীতে আর নাই। রাজনন্দন ছয় দিবস তাহার প্রার্থনা পূর্ণ করিলে ভাবিয়াছিলাম, সপ্তম দিবসেও তিনি কৃতকাৰ্য্য হইবেন । কিন্তু সে আশা বৃথা হইল। তাদৃশ গুণাকর রাজকুমার যখন পরাস্ত হইলেন, তখন অন্য কেহ যে, জয়ী হইবেন, তাহার ভরসা ফুরাইল । বোধহয়, রাজপুত্রীকে চিরকাল অনুঢ়াবস্থায় থাকিতে হইবে। অতএব এটি তাহার প্রতিজ্ঞ নহে, বিধাতার বিড়ম্বন । রাজা এইরূপ মনস্তাপ প্রকাশ করিয়া নিস্তব্ধ হইলেন । যুবরাজ কারাগারে নিক্ষিপ্ত হইয়া অশেষ যন্ত্রণ ভোগ করিতে লাগিলেন। দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ পাঠক মহাশয় । রাজকুমার স্বকুমার রত্নপুরের কারাগারে থাকুক, আমুন, আমরা মন্ত্রিপুত্র স্বমস্তের অন্বেষণ করি। তিনি কোথায় ? অামুন দেখিতে পাইবেন । স্মরণ থাকিতে পারে, মন্ত্রিতনয় পূর্বদিকে ভ্রমণ করিতে গিয়াছিলেন। তিনি বহুস্থান পৰ্য্যটন করিয়া যে স্থানে তপস্বী কপিরূপ ধারণ করিয়া তপস্যা করিতেছেন,