পাতা:মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্রহ প্রথম খণ্ড.djvu/২০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উদাসীন পথিকের মনের কথা, 〉。" করিবেন না। আমি আপনার ঔষধ করিব। কুঠিতে গিয়াই আপনার ঔষধ পাঠাইব । আমি জরের কথা শুনিয়া কয়েকটি ঔষধ সঙ্গে আনিয়াছিলাম। এখন দেখিতেছি আপনার এ-জর ভয়ানক জর, বিষাক্ত জর, আর ভয় নাই। আরাম পাইবেন । আজ যে ঔষধ পাঠাইব, তাহ খাইলেই বুঝিতে পারিবেন যে, আমার ঔষধে আরাম পাইবেন কি না । আমি আপনাকে বার বার নিষেধ করিতেছি কাহারও ঔষধ খাইবেন না । আমি এখনি ঔষধ পাঠাইয়া দিব। যে যে নিয়মে পান করিতে হইবে তাহাও পত্রে লিখিয়া পাঠাইব । টি. আই. কেনী এই বলিয়া চলিয়া গেলেন । সা গোলামের মনের আশা পূর্ণ হইল না। যে নুতন চাল চালিয়াছিলেন, তাহাতে কিস্তিমাত হইল না । কেনীর ঔষধ ভিন্ন মীরসাহেব আর কাহারও ঔষধ খাইবেন না । সা গোলাম স্বয়ং কমল কবিরাজের বাড়িতে গিয়া যে যে ঔষধের যোগাড় করিয়া আনিয়াছিলেন, তাহ কবিরাজের পুটুলিতেই রহিয়া গেল। প্রাণ বাচিল, টাকা ও থাকিল । উপস্থিত ঘটনায় সা গোলাম মনে মনে হাসিলেন কি কান্দিলেন, তাহা তাহারই মনে জানে। প্রকাতে সকলের নিকটেই বলিলেন – ঔষধ না খাইলে আর আমি কি করিব ! কমল কবিরাজের মত কবিবীজ বোধহয় এদেশে আর নাই । তারই ঔষধে যখন তার ঘৃণা, তখন আর ভরসা নাই । সাহেবের ঔষধ কত ভাল হয় দেখতে পারবেন । সা গোলাম কমল কবিরাজকে অনেক কথা কহিয়। বিদায় করিলেন। একটি টাকা দর্শনী দিলে কবিরাজ মহাশয় আর দুটি কথা বলিতেন না। সা গোলাম শ্বশুরের খাতিরে একমুঠে টাক কবিবাজের হাতে দিয়া, কবিরাজ বিদায় করিলেন । ব্যবস্থা লওয়া হইল না, ঔষধও গ্রহণ করা হইল না । একমুঠো টাকা দিয়া কবিরাজ বিদায় করিলেন। টি. আই. কেনীর প্রদত্ত শুষধ বসীরুদ্দিন মহাযত্বে মীরসাহেবকে সেবন করাইলেন । এতদিনের পর ঔষধ সেবন-মাত্রই চক্ষে নিদ্রা আসিল, ঘোর-নিদ্রায় নিদ্রিত হইলেন । স! গোলাম এতদিন নিশ্চিস্ত হেন নাই । মীরসাহেবের বাক্স, পেটার ও সিন্মুক মাঙ্গন-বিনোদের সাগষ্যে তন্ন তন্ন করিয়াছেন, কোন স্থানেই অছিয়তনাম প্রাপ্ত হন নাই। খুজিতে আর বাকি নাই। শেষে মীরসাহেবের পড়ার কিঞ্চিৎ উপসম হইলে, সা গোলামের মনে হইল যে, হা! এত স্বযোগ পাইয়াও So