পাতা:মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্রহ প্রথম খণ্ড.djvu/২০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উদাসীন পথিকের মনের কথা Sat কেনী বলিলেন—ভালহয় সে ভালকথা। কিন্তু হঠাৎ হাতছাড়া করিবেন না। ভবিষ্যৎ চিন্তু করিয়া কার্য্য করিবেন । মীরসাহেব কেনীর মুখপানে চাহিয়া রছিলেন। ক্ষণকাল তাহার মুখে কোন কথাই আসিল না। একটু পরে বলিলেন ভালকথা দারোগ খুনের কি হইল ? “সে মোকদ্দমায় মহা-হুলস্থূল বাধিয়াছে। শেষে সেকথা বলিব । বলুনতে পাংশার ভৈরববাবু সম্বন্ধে কি করি । তিনি আমার সহিত সময় সময় দেখা করেন বটে, কিন্তু আসলকাজে ভিড়িতেছেন না। লোকটি ভারি চতুর বটে। আমি বাঙ্গলাদেশের অনেক লোককে দেখিলাম । অনেকের সঙ্গে বিবাদ-বিসম্বাদ করিলাম। স্ত্রীলোকের মধ্যে প্যারীসুন্দরী—লাম করিতেও ভয় হয় । আর পুরুষেব মধ্যে ভৈরববাবু। ভৈরববাবুর আরও গুণ এই যে, তিনি নিতান্তই কৌশলী, দাঙ্গা-ফেসাদে অগ্রসব হইতে চাহেন না। বিষয়াদি লিখিয়া দিতেও অস্বীকার হন না। অথচ এরূপভাবে লিখিত-পড়িত করিতে চাহেন যে, আমি তাহার একটা তহশীলদার মাত্র থাকি : বিনাব্যয়ে খাজনার টাকা মাস মাস পান । ইহাই উহার আস্তরিক-ভাব । নিজের লাভ ব্যতীত কিছুতেই ক্ষতি স্বীকার করিতে চাহেন না । “ভৈরববাবু বড়ঘরানা বনিয়াদীবাবু। আমাদের সহিত এত নিকটসম্বন্ধ যে, হিন্দু-মুসলমান বলিয়া কোনপ্রকার হিংসার ভাব নাই। পুরুষানুক্রমে ভ্রাতৃভাব চলিয়া আসিতেছে। জাতিব-বিদ্যায় মহাপণ্ডিত, ফারসী ও আরবীতে মহাবিদ্যান, সঙ্গিত-বিদ্যায় এদেশে অমন গুণীলোক আর দ্বিতীয় কেহ নাই। যাহাই করুন তাহাকে সম্মত করিয়া করিবেন। এইটি আমার বিশেষ অনুরোধ। র্তাহার অসম্মতিতে আমি কিছুই করিব না। কিন্তু তিনি কেমন ভৈরববাবু আমি একবার পরীক্ষা করিব। তিনি বাঙ্গলাদেশের বুদ্ধিমান, চতুর। আমিও বিলাতী শয়তান দেখি, তাহার বাঙ্গালী-বুদ্ধির দৌড় কত ? আমি তাহার সহিত বিবাদ করিব না, কেবল বুদ্ধির দৌড় দেখিব। মস্তিস্কের ক্ষমতা বুঝিব। - - * মীরসাহেব বলিলেন–আচ্ছ তা দেখবেন—প্যারৗম্বন্দরীর কি হইল । কেনী বলিলেন-হা হা! সে কথাটা ভুলিয়াছি। জানেন-আমরা বিলাতের লোক যতগুলি এইজেশে বাস করিতেছি, আপনাদের সহিত বন্ধুত্ব ।