পাতা:মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্রহ প্রথম খণ্ড.djvu/২০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উদাসীন পথিকের মনের কথ। SSసె “কি হয়েছে দিন দিন যে একেবারেই সারা হইতেছ? আগে তো ভালই ছিলে,–পাচ ছয় মাসের মধ্যে তোমার ভাব অনেক বদল হইয়াছে । আবার আজ কয়েকদিন হইতে তো একেবারেই যাচ্ছেতাই দেখিতেছি। ক্রমেই যে সারা হলে ? কথাটা কি বলত ?” ময়ন কোন উত্তর করিল না। কিন্তু চক্ষু দুটি জলে পরিপূর্ণ হইল । চক্ষুজল সম্বরণ করিতে ক্ষমতা হইল না। দুই-এক ফোটা মাটিতে পড়িল অবলা নিঃসহায়ার চক্ষুর জল মাটিতে পড়িয়া মাটি ভিজাইল । পরে বলিল “আমার কিছু হয় নাই। কোন, পীড়াই আমার শরীরে নাই। তবে বলবে এ ভাব কেন ? সতীনের জালায় জলিতেছি—তাহীও নহে। সে সতীন তে আমিই অনিয়াছি—এ সংসারে আমিষ্ট কর্তা, আমার হাতেই সকল, কিছুতেই আমার দু:খ নাই। অথচ এ জগতে আমার আর সুখ নাই । আমার মনেব কথা মনেই রহিল ।” “বোন ! অনেকদিন হ’তে ইচ্ছা একটি কথা তোমায় জিজ্ঞাসা করিব, কিন্তু সময় পাই নাই । তোমার সম্মুখে কেহ বলে না । ভেঙ্গেচুরে খোলাস করেও কেহ বলিতে সাহসী হয় না । আকার-ঈঙ্গিতে অনেকেই অনেক অনেক কথা বলে । ভাই জকির সহিত তুমি কথা বল না । সে তোমার ঘরে আসে না । এ কথাটা প্রকাশ্যই সকলে বলে । পুরুষ বঁাজ হইলে দশটি বিয়ে কবিলেও ছেলেপেলে হয় না। এ কথাটাও সঙ্গে সঙ্গে উঠে । কিন্তু তোমাব মুখের ভাব, শববেব অবস্থা দেখে অনেকেই অনেক কথা বলে। কিন্তু মূখফুটে কেহই কিছু বলিতে সাহস পায় একট, ঘাং রাখিয় দেয যে, হলেই দেখা যাইবে।” - ময়না নিরব—কিন্তু চক্ষের জলে মাটি ভিজিতেছে । প্রতিবেশিনী পুনরায় বলিল, কান্দ কেন ? সকলই কপালের লেখা। ময়না অঞ্চল দিয়া চক্ষু মুছিয়া বলিল বোন ! আমি সকলকেই চিনিয়াছি। বিশেষ কবিয়া স্বামীকে চিনিয়াছি। স্বামী, আপন স্বামী—হায় ! জকি ঔষধের শিশি লইয়া উপস্থিত হইয়া বলিল, সাহেব ঔষধ দিয়াছেন। প্রতিবেশিনী বলিল—কিসের ঔষুধ ? ময়না বলিল—বেদনার ঔষধ। জকি শিশি রাখিয়া ঔষধ খাওয়াইবার জন্য ভারি বাস্ত হইল। সাহেব বলিয়াছেন তোমার স্ত্রীর হাতে ঔষধ দিও। তুমি খাওয়াইও না। এ কথাটা