পাতা:মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্রহ প্রথম খণ্ড.djvu/২০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S o o মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্ৰহ বলিতে তখন জকির সাহস হইল না। কারণ সম্মুখে পাড়ার একটি স্ত্রীলোক । কিসে ঔষধ খাওয়াইবে, এইকথাই বার বার বলিতে লাগিল। * ময়না বলিল ঔষধ দেও খাই ! ব্যস্ত হইতেছ কেন ? জকি বলিল—ন। না বাস্ত কি ! তা—ন।—ঔষধ খাও। এখনই বেদন সারিয! যাইবে । ময়না বলিল—“দে ও তুমিই হাতে করিয়া দেও খাইতেছি।” জকি—ত। আচ্ছা দেই, খা ও বলিয়া শিশির সমুদায় ঔষধ ময়নার মুখে ঢালিয়া দিয়া জকি নিস্তার পাইল । ঔষধ গলাধ করিতে ময়নার মহাকষ্ট হইল । অনেকক্ষণ পর্যন্ত নিশ্বাস ফেলিতে পারিল না । জকি ঔষধ খাওয়াইয়া বলিল যে, সাহেব জল দিয়া মিশাইয়া খাইতে বলিয়াছিলেন, তাহা তো হইল না । সে কথাটা আমি ভুলিয়া গিয়াছি । তাড়াতাড়ি ঘটি আনিয়া ময়নার সম্মুখে বাখিয়া দিল । ময়না জলপান করিল না। জকি শিশিটি লইয়া বার বার দেখিতে লাগিল, এবং শিশির গলায় স্বতা বাধিয়া ঘরের বেড়ায় ঝুলাইয়া রাখিল । এবং তামাক খাওয়ার বন্দোবস্ত করিতে হকা-কলকে লইয়া ঘর হইতে লাহির হইল । প্রতিবেশিনী আবাব জিজ্ঞাসা করিল বোন ! কিসের বেদনা ? ময়না একটু স্থির হইয়! বলিল—বেদনা আমার মাথ। আর মুণ্ডু ! জকি কলিকায় তামাক সাজিতে সাজিতে বলিতে লাগিল—সাহেব বলিয়া দিয়াছেন যে, ঔষধ খাওয়াইলে কিছুক্ষণপর কি ভাব হয়, বেদন কমে কি বাড়ে, আসিয়া বলিও । প্রতিবেশিনী বলিল—বোন ! আমি এক্ষণে যাই, বাড়ির কাজকাম অনেক বাকি আছে । আবার আসিয়া দেখিয়া যাইব । প্রতিবেশিনী চলিয়া গেল । ময়না যেখানে ঔষধ খাইল, সেইখানেই বসিয়া রহিল। ক্রমে পেটমধ্যে যেন আগুন জালিয়া দিল । কয়েকবার উঠিয়া ঘরের কানাচি-গিয়া শেষে একেবারে অচল হইয়া পড়িল । সপত্নী ব্রজ বাড়ির অনেক কথাই জানিত। ময়নাকে ধরিয়া কয়েকবার কানাচি লইয়া গেল। শেষে ময়ন অস্থির হইয়া পড়িল। কাপড় অসামাল হইল। জকি সাহেবের নিকট সংবাদ দিতে দৌড়িয়া ছুটিল। বঁচিবার ভরসা নাই, চক্ষু ঘোর হইয়া আসিতে লাগিল, সপত্নী ব্রজের কোড়ে মাথা রাখিয়া