পাতা:মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্রহ প্রথম খণ্ড.djvu/২১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

+ obr মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্ৰহ হইতে কড়িয়া লই । অদৃষ্টে যাহ থাকে তাহ হইবে। আবার ভাবিলেন যদি এ বাক্সেও না থাকে, তবে আরও বিপদ। এতকালের পরিশ্রম চিন্তা সকলই মাটি । সাত-পাচ ভাবিয়া বড়ই দুঃখিতভাবে সকলের সঙ্গে সঙ্গে ঘাট পর্য্যস্ত যাইতে লাগিলেন । মীরসাহেব গৌরীতটে যাইয়া নৌকায় না উঠিয়া জলের কিনারায় দাড়াইলেন। সঙ্গীরাও দাডাইল । স! গোলামকে দুঃখিত দেখিয়া বলিতে লাগিলেন—বাপু ! চিস্তা কি ? আমি শীঘ্রই ফিরিয়া আসিব । আমি তো আর চিরকালের জন্য যাইতেছি না যে, এত দুঃখিত হইয়াছ। বিষয়াদি, বাড়ি, ঘর, পরিবার সকলই থাকিল। আপন কাজকৰ্ম্ম দেখিয়া করিবে ! ঈশ্বর-ইচ্ছায় কোন বিষয়ে ভাবনাচিস্তার কাবণ থাকিল না ! মধ্যে মধ্যে কেনীব সহিত সাক্ষাৎ কবিও । কোন গুরুতর কার্য্য উপস্থিত হইলে তাহাব সহিত পরামর্শ কবিয়া, তিনি যেরূপ উপদেশ দেন, সেইরূপ করিবে । সাবধান ! কেনৗব সহিত কোন বিষয়ে গোলযোগ না হয়। সাবধান ! লোকের কথায় তাহার বিরুদ্ধাচারা হইও না। এইপ্রকার নানা কথা বলিয়, সা গোলামের মাথায়, মুখে, হাত দিয়া আশীৰ্ব্বাদ করিয়া মীরসাহেব বিদায় হইলেন । সকলেই মাথা নেয়াহঁয়া সালাম বাজাইল । নৌকার সিড়ির উপব উঠিতেই কি কথা মনে হইয়া হাতবাক্স আনিতে অল্পমতি করিলেন । বাক্স খুলিযা একখান জড়ান কাগজ বাহির করিয়া, সা গোলামকে বলিলেন—আমি নৌকাপথে যাইতেছি। পদ্মা, যমুনা হইয়া যাইতে হইবে। ভবিষ্যতের কথা বলা যায় না না। এই দলিলখানিষ্ট মূল। ইহাই আমাদের সর্বস্বধন ! আমার পিতা-কুত “অছিয়তনামা” এই দলিলখানি বড় দরকারী এবং আবশ্যকীয় দলিল—হারাইলেই সর্ববস্ব হারাইতে হইবে । কারণ এ সম্পত্তির শক্ৰ অনেক । আর যত দলিল আপনাকে দিয়াছি, সকলের অপেক্ষা এ-খানি অধিক সাবধানে যত্নের সহিত রাখিতে হইবে । জলের উপরে যাওয়া, এ সকল দলিল বাটিতে সাবধানে রাখাই ভাল। বাপু ! সাবধানের মার নাই। আমি বহু যত্নে দলিলখানি সৰ্ব্বদা আপনকাছে রাখিতাম, তুমিও যত্বেই রাখিবে। বিশেষ সাবধানে রাখিবে বলিয়া অছিয়তনামা সা গোলামের হাতে দিলেন । স! গোলাম অছিয়তনামা হাতে পাইয়া একেবারে আত্মবিস্তৃত হইলেন। যা কখনও স্বপ্নেও ভাবেন নাই তাহাই ঘটিল। যাহার জন্য এত চক্র, যে দলিল