পাতা:মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্রহ প্রথম খণ্ড.djvu/২১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উদাসীন পথিকের মনের কথা । & ο δ' হস্তগত কবিবার জন্য দুগ্ধে বিষদান, কবিরাজের সহিত ষড়যন্ত্র, কত চক্র, কত চেষ্টা, কত পরিশ্রম, আজ র্তাহার ভাগ্যে লক্ষ্মী প্রসন্ন হইয় তাহাকেই বিশ্বাসী পাত্র করিয়া মীরসাহেবের সর্বনাশ ঘটাইতে মীরসাহেব হস্তেই অছিয়তনামা সা গোলামের হস্তগত হইল। কি আশ্চর্য । ঘটনাস্রোত নিবারণ করে সাধ্য কার ! বিধির-নিৰ্ব্বন্ধ ঘুচাইতে ক্ষমতা কার! আত্মবিশ্বতে শ্বশুরকে প্রণাম করিতেও সী গোলামের মনে হইল না। মীরসাহেব নৌকায় উঠিলেন। মাঝিরা লগি উঠাইয়া “দরিয়া গাজী, পাঁচ পীর বদর বদর” বলিতে বলিতে নৌকা জলে ভাসাইয়া দিল । সুবাতাস পাইয়া দাড়ীর আর গুণ টানিতে নামিল না। পাইল খাটাইয়া মনের আনন্দে যাইতে লাগিল। নৌকা গৌরীর জলে, গা ভাসাইয়া বায়ু-সহযোগে শ্ৰোত অতিক্রম করিয়া উজান ছুটিয়া চলিল। মীরসাহেব জলে ভাসিলেন। চিরকালের মত জলে ভাসিলেন । একবিংশ তরঙ্গ গTরদের কয়েদী ছয়মাস যায় စ္ႏိုင္ငံ অন্ন নাই, তবে বঁাচে কিসে ? প্রাতে প্রতিজন একসের ধান পায় । সেই ধান হাতে খুটিয়া খুটিয়া চাল বাহির করে। সেই চাল আর সন্ধ্যার সময় এক ঘটী জল ইহাই মালখানার কয়েদীর আহারের ব্যবস্থা। কেনীর গারদ বড়ই কঠিনস্থান। যাহার ভাগ্যে সে গারদবাসের অবসর হয় তাহার জীবনে সংশয় । পাড়ে, দোবে, চোবের অত্যাচারে, অর্থপিশাচদিগের অমামুষিক ব্যবহারে প্রাণ আর বঁাচে না। তবে যাহার আত্মীয়-স্বজন আছে, দুটাক মেলামী —গারদ-সেলামী দিবার সাধ্য আছে, তাহার পক্ষে দুই একদিন একটু নরমে যায়। তাহারপরেই হাড় ভাজাভাজা হয়। প্রাণ যাই যাই করে। মানুষের কঠিন প্রাণ—বিশেষ বিপদগ্ৰস্ত, বিপদাপন্ন ব্যক্তির কষ্টের জীবন । সহজে প্রাণ বাহির হয় না। তাহাতেই কেনীর গারদের কয়েদী—কাজী সমসের আলী এবং উাহার ভ্রাতুষ্পজগণের প্রাণ আজ পর্য্যস্ত বাহির হইয়া সংসারচক্রের জালা-যন্ত্রণ হইতে রক্ষা পায় নাই। হায় ! কি দুঃখের কথা ! বিনাপরাধে কয়েঙ্গ। পৈতৃক সম্পত্তি লিখিয়া দেয় নাই, তাহাতেই এই বিপদ-গারদে আবদ্ধ। দ্বারে দ্বারে খাড়া পাহারা। হায়! কেমন করিয়া লিখিয়া দিবে ? কোন হাতে, কোন কলমে, কোন S8