পাতা:মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্রহ প্রথম খণ্ড.djvu/২২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উদাসীন পথিকের মমের কথা २$१ “আমি জানি, যে আমার ঘরের লক্ষী ছিল সে চলিয়া গিয়াছে।” “সে চলিয়া গিয়াছে না বাচিয়াছে। তোমার হাত হইতে রক্ষা পাইয়াছে। তুমি টাকার লোভে তাহার সঙ্গে যে ব্যবহার করিয়াছ, তাহাকে যে পথে চালাইয়াছ, যে প্রকারে বাঘের মুখে—মাহুষ-বাঘের মুখে ধরিয়া দিয়াছ তাহা সকলি শুনিয়াছি। তুমি টাকা হাতে পাইলে না পার এমন কোন কুকাজ দুনিয়া-জাহানে নাই। সে কি করিবে ? তোমার হাত হইতে বৃক্ষ পাওয়ার কোন উপায় ছিল না। নিজের প্রাণ নিজে দিতেও কতদিন সে প্রস্তুত হইয়াছে, পারে নাই। নিরুপায় হইয়া তোমার অত্যাচাব সহিয়াছে। স্বামী হইয়া যাহা করিয়াছ, ভালই করিয়াছ । সে পাপের ভোগ তোমাকে কোনদিন ভোগ কবিতেই হইবে । তা যা করিয়াছ ভালই করিয়াছ । আমি তোমার দুখানি পায় ধরিয়া মিনতি করিয়া বলিতেছি, আমার বাপ-মাযের বাড়িতে আমাকে পাঠাইমা দেও । আমার মন বড়ই অস্থির হইয়াছে । অনেকদিন হইতে মাকে দেখি ন!—বাবাও আর এখানে আসেন না । র্তাহাদিগকে দেখিবার জন্ত আমার মন বড়ই উচাটন হইয়াছে । আমি খোদার নাম করিয়া বলিতেছি, এখানকার কোনও কথা আমি কাহার ও নিকট বলিব না । আমাকে শীঘ্রই পাঠাইয়া দেও। কিছুদিন পরে আমি আবার আসিব । তুমি নী পাঠাও তাহাদিগকে খবর দিলে তাহারা আমাকে লইয়া যাইবে ।” জকির মুখে কথা নাই। যে কথা কেউ জানে না—মনের অগোচর, স্বপ্নের অগোচর, সেই কথা তুলিয় এতকথা বলিল। জকির গা দিয়া ঘাম ছুটিল। রোধভাব বহুদূর সরিয়া গিয়া লজ্জায় মাথা নিচু হইল। কালমুখ আর কাল হইয়া গেল । এই সময় বাটি হইতে কে উচ্চস্বরে ডাকিতে লাগিল, ‘ভাই জকি বাড়িতে আছে ? জকি গলার আওয়াজেই চিনিতে পারিয়! ভাঙ্গাস্বরে উত্তর করিল—ভাই ! বাড়ির ভিতরে আইস । আমার ঘরের লক্ষ্মী আমাকে ছাড়িয়া গিয়াছে। এখন এক অলক্ষ্মীর হাতে পড়িয়াছি—আর আমার ভালাই নাই । আগন্তুক বাড়ির মধ্যে উপস্থিত। জকি আদর করিয়া একখানি পিড়ি আনিয়া দিল, আগন্তুক ভ্রাতা ছাতি, লাঠি সম্মুখে রাখিয় পিড়ি পাতিয়া বসিল । তখনই তামাক, তখনই হাত-পা ধুইবার জল, তখনই জলযোগের (নাস্তার) খই, বাতাস ভাইয়ের সম্মুখে দিয়া ময়নার মরণকথ। অতি সংক্ষেপে বলিয়। নানা