পাতা:মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্রহ প্রথম খণ্ড.djvu/২৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨૨૨ মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্ৰহ চার মধ্যে বিষ মিশাইয়। দিয়াছি। বিষের কেীট। এখনও কোমরেই আছে। সাহেব প্রহার ক্ষাস্তদিয়া কোমরের কাপড় খুলিতে খুলিতে কৌটা পড়িয়া গেল, আর জকিকে প্রহার করিলেন না ! বন্ধন অবস্থায় একটি কক্ষে তালাচাবি দিয়া বন্ধ করিবার আদেশ দিলেন। আরও আদেশ করিলেন যে, এই রাত্রেই জকির বাড়ি, ঘর, দ্বার ভাঙ্গিয়া কালীগঙ্গায় ভাসাইয়া দেও। মালামাল, টাকাকড়ি যাহ থাকে, সমুদায় কুঠিতে লইয়া আইস । আদেশ মাত্র রামইয়াদ, ধনইয়াদ, লছমীপৎ সিং, রামলাল তেওয়ারী, কুড়ান, জুড়ান, নবীন প্রভৃতি প্রধান প্রধান সর্দার, দেশওয়ালী উৰ্দ্ধশ্বাসে ছুটিল। কুঠির বাজে চাকর যাহারা চিরকাল জকির নামে হাড়েচটা তাহারাও লাঠিয়ালদিগের সঙ্গে যাইয়া জকির বাড়ি লুট আবস্ত করিল। জকির স্ত্রীর পূৰ্ব্বেই পিতার বাটিতে গিয়াছিল। বাটিতে কয়েকজন চাকর মাত্র ছিল । কে কোথায় পালাইল, তাহার আর সন্ধান হইল না। টি. আই. কেনীব চক্ষে সে রাত্রে নিদ্রা নাই । কুকুরের দশা যাহা স্বচক্ষে দেখিলেন, নিজের অবস্থাও তাহাঙ্গ ঘটিত—এই সকল চিন্তা করিয়া আরও নানাপ্রকার কথা মনে উঠিল। চিন্তিতভাবেই সে রাত্ৰি কাটিয়া গেল । প্রত্যুষেই প্রধান কাৰ্য্যকারক হরনাথকে ডাকিয়া জকির অবস্থা বলিলেন। আর আদেশ করিলেন যে, তুমি নিজে যাইয়া দেখ, জকির সমুদায় ঘর ভগ্ন হইয়াছে কিনা। যদি না হইয়া থাকে—একেবারে সমভূমি করিয়া কালীগঙ্গায় ফেলিয়া দিও । বাড়ীর নিশান মাত্র না থাকে। এবং ভিটায় চাষ দিয়া এখনই নীল বুনানি করিয়া আসিবে ইহার কোন বিষয়ে ক্রটি না হয়। হরনাথ সেলাম বাজাইয়। মনিবের আজ্ঞা প্রতিপালন করিতে চলিলেন । সাহেব পুনরায় ডাকিয়া বলিয়া দিলেন । আর একটি কথা । মুসলমানেরা কবরকে বড় মান্ত করে । কোন কবরের উপর যেন চাষ দেওয়া না হয় । সাব ধান ! আমি এখনই জকিকে পাবনায় মাজিষ্ট্রেট সাহেবের নিকট চালান করিব । হরনাথ পুনরায় সেলাম করিয়া বিদায় হইলেন । টি. আই. কেনী পাবনার মাজিষ্ট্রেট সাহেবের নিকট সমুদায় বৃত্তান্ত লিখিয়া জকিকে বন্ধন করিয়া পাবনায় পাঠাইয়া দিলেন । পরে জকির স্বীকৃত-জবাবে বিষ পরীক্ষার পর সেসনের বিচারে জকির