পাতা:মীর মশাররফ হোসেন রচনাসংগ্রহ প্রথম খণ্ড.djvu/২৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উদাসীন পথিকের মনের কথ। રર.૪% যাবজ্জীবন দ্বীপান্তর দণ্ডাজ্ঞা হইল। জকির স্ত্রী পিতা-মাতার বাড়ি থাকিয়া স্বামীর অবস্থা শুনিয়া কান্দিয়া, নাকের নথ, হাতের চুরি সমুদায় খসাইয়া ফেলিল । জকির প্রসঙ্গ, জকির দ্বীপাস্তর গমনের সঙ্গে সঙ্গে একেবারে শেষ হইয়া গেল । পঞ্চবিংশ তরঙ্গ ভৈরববাবু পাংশ স্টেশনের নিকটেই ভৈরববাবুর বাড়ি । ভৈরববাবু বনিয়াদীবাবু। যে সময়ের কথা, সে সময় বাবুর সংখ্য বড়ই কম ছিল। বাবু বলিতে ভৈরববাবু। বিশেষ মান্ত-গণ্য, বনিয়াদী-ঘরানা, সচ্চবিত্র, সৎ-স্বভাব, সকলেব প্রিয় যিনি, তিনিই বাবু নামে পরিচিত হইতেন। শুধু আলবার্ট কেতায় চুল কাটাইয়া সিথির বাহার উড়াইলে সে সময বাবু হওয়া যাইত না। বাবুর বাজার বড়ই কড়া ছিল । ভৈরববাবু যথার্থ বাবু। ভৈরববাবুকে জব্দ করাই এখন কেনীর মতলব । মীরসাহেব ভৈরববাবু সম্বন্ধে অনেক বলিয়াছেন। বাবুকে বিশেষ কোনরূপ বিপদগ্ৰস্ত না করিয়া তাহাকে একট, জব্দ করাই কেনীর নিতান্ত ইচ্ছা। সকলেই বলে ভৈরববাবু ভারি চতুর, বুদ্ধিমান, সহজে ঠকিবার পাত্র নহেন। কেনীর তাহ সহ হয় না। বাঙ্গালী বুদ্ধিমান, বাঙ্গালী সুচতুর, বাঙ্গালী বিচক্ষণএকথা কেনীর সহ হয় না । ভৈরববাবুকে আচ্ছা করিয়া জব্দ কবিয়া সাধারণকে দেখাইবেন, বিলাতী চাল চালিয়া বাবুকে মাত করিবেন, এই আশাতেই বড় সাবধানে ব’ড়ে টিপিতেছেন। বাবুও কম নহেন আত্মরক্ষায় খুব সাবধান হইয়াছেন। তিনিও তুখোড় খেলোয়াড়, সহজে পড়িতেছেন না । কেনীর প্রধান গোয়েন্দা ফটিক, আর হরিদাস। ফটিক প্রায়ই ফকির-বেশে গোয়েন্দাগিরি করে । হরিদাস বৈরাগী সাজিয়া খমক বাজাইয়া মনিবের কার্য্যোদ্ধার জন্য গান করিয়া বেড়ায় । সময় সময় খনজনীও বাজায়। ভিক্ষাও করে। ভৈরববাবুর চাকরেরা সন্ধানে জানিয়াছে যে, এবারে লাটের কিস্তির খাজনা যশোহরে যাইতেই, যে কৌশলে হউক পথ হইতে কেনী লুটপাট করিয়ী লইবে । বাবুও সে কথা শুনিয়াছেন। খাজনা দাখিলের দিন নিকটে আসিল । আমলারা সকলেই বলাবলি করিতে লাগিল যে, বাবু খাজনা পাঠানোর কোন উপায় করিলেন না। পথে